কয়েকটি কবিতা

আলতাফ হোসেন

ইউথ্যানাসিয়া

ইউথ্যানাসিয়া এসে ঘুরঘুর করল
ঘুরঘুর করল
একদিন যেমনটা করেছিল
কোকানোভা

বালগেরিয়ার
খসরু-র ফিল্মোৎসবে

একদাসমাজতন্ত্রে তুমিও বাসিনী?
কোমলাঙ্গ আপেলরঙ আনতনয়না
ঘুম
জড়িয়ে ধরবে কি
ঘর্ঘর ঘর্ঘর শব্দ। ট্রাক থেকে নেমে এল মার্সি কিলিং

 

প্রত্যেক রাতকে

প্রত্যেক রাতকে ভাবি শেষ রাত
কুকুররা ডাকছে
ঘড়ি ফেলছে পা, তার
হাত উড়ে গেছে
তিন মাস ছয় মাস পার
কাল যদি নতুন এসএমএস-এ …

 

কারো-না-কারো মতো

কারো-না-কারো মতো হচ্ছে তো
একদিন চন্দ্রকান্ত টিলাটির শীর্ষে ওঠা থেকে
ঠুংরি গাঙের বিহার
ধলেশ্বরীর কিনার ঘেঁষে ছিপ ফেলে
সহজ বেলে মাছ
একজনই থেকে অন্যজন অন্যজন
সাপের শরীরে
সাঁতার কাটছে

 

একেকজনকে

একেকজনকে আনছেন
খারিজ করছেন
(করতেই হবে।
সকলেই করে।)
কলিন উইলসন
পদ্ধতি মন্দ নয়
আজ তার নাম তবু বলছে না কেউ
আমরা ক’জন জানি
তা হোক না
দেকার্ত অনেকদিন ছিলেন
তুমি যে ভাবছ তার মানেই তো আছ
ভাবছ যে আছ তুমি তাই বুঝি আছ
বললেই হল
আমি বুঝছি না
আমাকে না নিয়ে
এগোও এক পা
এগোও তো দেখি…

 

হৈমন্তী

কাটা গাছটা দাঁড়িয়ে — ঠিক ট্রেনের সিগন্যাল
শুধু সবুজ বা লাল বাতিটা নেই
পাশের বাড়ির বারান্দায় দুটো শাদা পাখিকে চুমু খেতে দেখেছি একটু আগে
লাল জামা ও ধূসর লুঙ্গিতে একজন রিক্সাঅলা, প্যাসেঞ্জার যাচ্ছে
ছোটবেলায় ইস্কুলে আমাদের বাক্য লিখতে বলা হত, না, হত না মনে পড়ছে না
একটা গাড়ি গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের নারী ক্রিকেটারের গলায় চিৎকারে
আমি অনেকদিন কোনও নাটক দেখতে যাইনি
এখন কিনা চারতলা ফ্ল্যাটের ব্যালকনিতে
শিল্পকলা-থিয়েটারের সবশেষেরটির নাম ছিল…না না, মনে পড়ছে না
একটি দৃশ্যের পর অস্থির অপেক্ষা ছিল পরের দৃশ্যের
এখন তো মঞ্চসজ্জা নেই, এখন তো নির্দেশনাও নেই
একটি ছুরিবঁটিধারকরাঅলা এসে চাকা ঘুরিয়ে ঝরর ঝরর করছে
বাচ্চারা কোত্থেকে এসে খেলছে নিচে

 

বাঘেরা

পথের মোড়ে মোড়ে আজ ওত পেতে আছে বাঘেরা
বন থেকে এসেছে নাকি চিড়িয়াখানা থেকে?
অরণ্য থেকেই
ক্ষুধার্ত লাগছে ওদের
আর পেশীবহুল
কীভাবে যেন বাড়ি থেকে বেরোতেই ওদের চোখে পড়ে আমার
কিন্তু একবার যখন বেরিয়েছি তখন কী করে ফিরি?
ভয় পাওয়াটা জানি যে লজ্জার
অন্য লোকেরা দেখি নির্বিকার হেঁটে যাচ্ছে
একটু পরেই সব বুঝতে পেরে যাই
রাগী বাঘগুলো আমারই অপেক্ষায়
কিছুই করার নেই
এগোতে থাকি

আজ বাড়িতে ফিরতে না জানি কত দেরি হবে!

 

বেঁচে আছ?

হয়তো পড়ছ বসে বা লিখছ একদিন যেমন ছিল বাতিক লেখার
কিংবা ফোনে বকর বকর…
তিন বছর সাত মাস বয়স বেড়েছে
তার কোনও ছাপ চোখেমুখে?
মনে হচ্ছে এখনও আছ ওই বাড়িতেই
অফিস আগেরটাই? মামার বাড়ির আবদারের?
মেয়ে এতদিনে যায় কলেজে নিশ্চয়
পাঁচটা পর্যন্ত অপেক্ষা না করে বেলা দুটোতেই বাড়ি ফেরো তো,
পথ থেকে প্রেমিককে তুলে নিয়ে?
লুকিয়ে, কিন্তু গাম্ভীর্যের মুখোশটা এঁটে? কম্পোজড্?

ওই যুবকটিই তো?

আশ্চর্য, মাত্র আধ ঘণ্টা দূরে থাকি। তা বাদে জানি না থাকা বা না থাকা।

বেঁচে আছ? তুমি?

না কি মরে গেছ? গিয়ে ওই যুবকেরই তো কাছে যাবে ফের…

Facebook Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top