যশোধরা রায়চৌধুরীর কবিতা

অন্তর্জলী যাত্রা

 

ক্রমশ সমস্ত দেহ থেকে জল কাটতে কাটতে
মেয়ের হাত পা মাথা সব জলের তলায়
তুই শশা নাকি তরমুজ
গরমে গলে যেতে লাগলি টাটকা সবুজ পাতাঢাকা বাঁধাকপির মত
যাকে তুই চিনতিস বেজায় কম বয়সে আর যার আক্কেল বলতে কিছু ছিল না বলে
সবার সামনেই হাঁপাত, বলে দিত মনখারাপের কথা।

একদিন আমাদের সবার সাথে
ও-ও এক হয়ে গেল, ও-ও ভিড়ে গেল ভিড়ের ভেতর, আমাদের
চেতনা অবিশ্রান্ত শৈশব গুলে গুলে খেয়ে যখন বার্ধক্যে ঝিমোচ্ছে,
তখন সত্যিকারের একজন কাঁচা সবুজ এসে, ভিজিয়ে দিচ্ছিল ফুলঝুরির মত কথায়
পৃথিবীর যাবতীয় শুকনো জিনিশ

সেইদিন থেকেই আমরা ওকে টেনে নিলাম আর ওর প্রাণরস চুষে খেলাম
মেয়েটা জলস্রোত, কিন্তু ওকে বেঁধে দিলাম আমরাই।
ঢালাও আরাম আর আনন্দের পর, এইবার
একদিন শুকনো খরার মত সেই মেয়ে উঠে বসল, আর বলল, আমার জল কোথায় গেল বলো।

আমরা বললাম, তুই যা ওই দিঘির কাছে। আমরা কিচ্ছু জানি না।

এবার আবার সে খুঁজে বার করেছে জলভরা পুকুর
বিলের ভেতরে ডুবে আছে ওই মেয়ে, আর জলের তলায় বিশাল হয়ে উঠছে ওর স্তন
ভেজা আঁচলের পালের মত ফুলে ফুলে উঠছে জলের তলা থেকে
এই মরে যাওয়ার মানেও আসলে আবার বেঁচে ওঠা, কারণ সবকিছুর পরেও
ওর বিশাল শরীরের উপর ছলকে যাচ্ছে আলো

আমাদের সবাইকে হতভম্ব আর অবাক করে দিয়ে
আরেকবার জল কাটতে শুরু করে দিল ওই বিশাল তরমুজ
নাকি শশা
যার মধ্যেখানটা সরু, সারাগায়ে খাঁজকাটা খাঁজকাটা

রোমাঞ্চিততনু ওরে মেয়ে, আবার সবার সামনে নির্লজ্জের মত তুই ফুলে উঠলি, আনন্দ পেলি
খুশি হলি, আর তারপর তোর প্রাণরস উঠতে লাগল শনশন করে,
দাঁড়িয়ে উঠল একটা ফোয়ারা

 

 

Facebook Comments

3 Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top