জেনিস মাহমুনের একগুচ্ছ কবিতা

ঘোড়াডুম একটি ঘোড়া রাতের চারণ শেষে আস্তাবলে ফিরল জ্যোৎস্নশাসিত রাত্রির প্রতিভা শেষ করে। তার শরীরে ক্ষুধাবোধ। উপত্যকার ঢাল বেয়ে নীচে ঝরনার কাছে জলের আহ্বানে গিয়েছিল। দু’ঢোক জলে গ্রীবার মরু-প্রশ্নের অন্তর …

তমাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের একগুচ্ছ কবিতা

মলিন ধারণাজন্ম-১ এমন বিচূর্ণ আলো রেখে গেছ ছায়াসমাধিতে! ছায়াটি অনতিদীর্ঘ। স্মৃতিভর্তি নানা সমাহার রেখেছে নীরব করে, যেন এক অপরাহ্নমায়া, যেন কোন পথশ্রমে অধীরের বাসনানিমেষে আমিও ‘হা-অন্ন’ বলে সমস্ত অনলে ফেলে …

কামরুল হাসানের পাঁচটি কবিতা

চিহ্ন তাঁর পদচিহ্ন তাঁর রাস্তা ক্রমে হতেছে রাজপথ পদচিহ্নের শিল্পভার বুকে বিন্যাসে বেণি দুললো দুপুরে হেঁটে যায় মৌন সে একা, মৃদু, তবু সুষমার মুগ্ধ সম্ভার বড় ভার ঠেলে দেয় বিমুগ্ধ …

শবরী শর্মা রায়ের গুচ্ছকবিতা

শুঁয়োপোকা শুঁয়োপোকা ধীরেধীরে খেয়ে চলেছে আঙুরগাছের পাতা পোকা স্বাস্থ্যবান পায়েপায়ে মানচিত্র পাতার পিঠে ক্ষত পাতা,একটি বিপ্লবের রান্নাঘর   ফোস্কা প্রথম মাছ ভাজার দিন তেল ছিটে ফোস্কা পড়েছিল জানা ছিল না …

গুলজারের কবিতা

[গুলজার হিন্দী ও উর্দু সাহিত্যের অন্যতম শক্তিশালী কবি এবং সাহিত্যিক। যদিও তাঁকে হিন্দী ছবির গীতিকার, কাহিনীকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবে দর্শকরা মনে রেখেছে বেশি। কিন্তু তিনি মূলত কবি। আর …

শ্যামসুন্দর মুখোপাধ্যায়র পাঁচটি কবিতা

আলাপ একদিন গভীর রাত্রে তিনি আমাকে শুধালেন আমার জীবনে তাঁর কোনো দান মনে পড়ে কিনা বললাম– ‘মনে পড়ে ‘ সেই যে সাপলুডো খেলার দিনগুলিতে দু-ফোঁটা জলের মতো দুটি পুট আমাদের …

শিউলী জাহানের একগুচ্ছ কবিতা: সম্পর্কগুলো পথ বা নদীর মতো নয়

ফলেন এঞ্জেল ছায়াপথে চলতে চলতে মানুষেরা একদিন প্রেমহীন হয়ে যায় নক্ষত্রের সারি ভোরের অপেক্ষায় রাতের সিঁথি কাটে, তখন জলপাই বনে প্রেমজ শোঁকে মসলার ঝাঁজ ; অদূরে পদ্মপুকুর, শিশির ভেজা দেহ …

শামীম আজাদের একগুচ্ছ কবিতা

হুইল চেয়ারে প্রজাপতি মানুষের কতো রকম প্যাশন থাকে, আমারও ছিলো সব বদলে গেছে এখন আছে শুধু একা কথা বলবার। ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যখন একা হাঁটি মনে হয় জলে ভাসি টের …

মেঘ অদিতির কবিতা: একটি হননের স্বপ্নদৃশ্যে

১ আকাশে এখন এই জল ভরা আলো আর সমস্ত কিছুর মাঝে ভাঙচুর… এত পাখি ওড়া বিভ্রম… আহ গাইজেস! কোথা থেকে ভেসে আসে হ্রেষা কত দূরে বন! বাতাসের অভিলাষী ঘ্রাণ মনে …

বদরুজ্জামান আলমগীরের গুচ্ছকবিতা

কাটা ঘুড্ডি গিমাই শাকের দেশে চিঠি জামপাতা কিছু কিছু মানুষ পোস্টম্যান হয়ে জন্মায়, দরজার চৌকাঠে শুভাশিস হয়ে শুয়ে থাকে। চিঠি আসুক কী না আসুক- ডাকপিয়ন আমাদের প্রতিদিন চিঠি বিলি করে …

পলিয়ার ওয়াহিদের পাঁচটি কবিতা

মেসোপটেমিয়ার ছেলে এনহেদুয়ান্না, হে আমার প্রেমের দেবী দেবী তুমি জ্ঞানেরও কেউ না মানুক, আমি জানি, তুমি পৃথিবীর প্রথম কবি নও তোমার আগেও ছিল আমার পূর্বপুরুষ কে না জানে ইতিহাস ক্ষমতাচারিদের …

কচি রেজার একগুচ্ছ কবিতা

কোলাহল কোলাহল করেছ আর চুপ করে বসে রয়েছ চারপাশে নিঃশব্দতার ছায়া আমি প্রতিবিম্বের ভিতরে এবং ওপারে কবেযে আয়না ভেঙে ভয়াবহ হবে অন্ধকার আমি বেরিয়ে পড়ব কবরস্থান থেকে যেখানে আমার পিতামহ …

সাজ্জাদ সাঈফের একগুচ্ছ কবিতা

হঠাৎ মৃত্যুযুগ হীরক-রোদের উত্তরে এসে মাটিমাখা ভাষার গোধূলি পাবো, সে আমি নিজেই ভাবিনি! ছায়া মেলে দুলছে পাতারা, গাছে- ধানী গন্ধের পাথারে ডেকে, ঈর্ষাকে, ঘোড়ায় এনে বসাই গম্ভীর দাবার ছকে এসে, …

জিললুর রহমানের পাঁচটি কবিতা

সামনে সমুদ্র বটে কতো বর্ষা কেটে যায় কতো সন্ধ্যা হয়েছে আঁধার, আমার সময় নেই ঘরে বসে নিরালায় দুদণ্ড কাঁদার। বুকের ভেতর কতো জমিয়ে রেখেছি বারুদের ক্ষোভ তাল তাল, দেশলাই খুঁজে …

মোনালিসা চট্টোপাধ্যায়ের সিরিজ কবিতা: ঈশ্বরজন্ম

ঈশ্বরজন্ম ১৬ স্বরের নিজস্ব এক দ্যুতি আছে যা আমিই জেনেছি বহু বিলম্বিত গেয়ে গেয়ে আলাপ বিস্তারে । কথা যদি বিন্যাসের ভেতর শ্রাবণ জারি করে আজ মনসায় বিয়ে হোক তোমার আমার …

দারা মাহমুদ: কোভিড কবিতা

দুনিয়া যখন কোয়ারেনটিনে রঙিন শপিংমল বন্ধ, রাস্তাগুলো নিজেরাই একা একা হেঁটে যাচ্ছে লৌকিক গলির দিকে— এই সঙ্গ নিরোধকালে কোনো ক্যাফে নেই সব ক্যাফে বেড়াতে গিয়েছে সুন্দরবনের চৌপদী জঙ্গলে দুনিয়ার সব …

শুভম চক্রবর্তীর একগুচ্ছ কবিতা

শ্রীচৈতন্য সমুদ্রে ছড়ালো জাল। উঠে এ’ল ইয়া লম্বা দেহ। আজানুলম্বিত হাত। ধপধপে সমূহ শরীর। কষ বেয়ে রক্ত নামে। গোঁ গোঁ ক’রে এমন চেঁচায়। তাতেই বিদীর্ণ যেন নীলজল আর নীলাকাশ। সমুদ্রে …

সৌমনা দাশগুপ্তের কবিতা

রামধনু  সমস্ত করমর্দনের মাঝখানে একটি অন্ধকার থাকে করমর্দন করতে গিয়ে তুমি আসলে একটি অন্ধকার ছুঁয়ে ফেলছ। বিনিময়ের আগে এবং পরেও রামধনু। অন্ধকার বিলি হয়ে যাবার পর পড়ে থাকে শুধু একটা …

আসমা চৌধুরীর তিনটি কবিতা

বামপাশ এখনো বামদিকে কাত হয়ে শুই বামদিকে ঘণ্টা ধরে ধুকপুক শব্দের কৌটায় রাখি তোমার নাম। পাশ-ফিরে আলস্য ভেঙে উঠে যেতে চাই, কে যেন মৃদু স্বরে বলে, ঘুম শেষ হলো? বাম …

মহিউদ্দীন মোহাম্মদের কবিতা: অধুনা দিনের কাসিদা

এক. মানুষে মানুষের এতযে পূজা চান; বুঝেনি আগে আমি,তাইতো বিস্ময়। প্রেম ও ভালবাসা উড়ছে কর্পুরে। পুষ্প তরতাজা, তৈল শরিষায়- লোকেরা হতে চান খুশিতে গদ গদ। দাসের পাঠ নিয়ে, মঞ্চে প্রভু …

তমোঘ্ন মুখোপাধ্যায়ের সিরিজ কবিতা

বৃত্তপথ ১ গল্পের অবাক পেটে বলি যাওয়া ভাষা পড়ে আছে। কী যে ফল, কী যে কর্ম, ইদানীং সমস্ত গোলায়। গোলায় ইতরের থান, মধুচক্রে ফুলের ভূগোল। ভাষার নীচের ঠোঁটে মাছি আসে, …

শামস আল মমীনের তিনটি কবিতা

কেমন আছো তুমি তোমাকে দেখেই বুঝে নিতে পারি তুমি আছো কেমন। আজন্ম দুঃখের নোলক পরে কার্তিকের আকালের মতো ঘুরে ফিরে আসো তুমি। তোমার অ-বলা জিভ অকস্মাৎ রোদ ওঠা আকাশের চেয়ে …

স্বপন নাগের তিনটি কবিতা

গাছের কাছে নদীর কাছে এই কথাটাই জানাতে চাই , জেনে রাখা ভালো : অন্ধকারকে আড়াল করছে সাজানো সব আলো ! এই যে এত আলোর বাহার, আলোর মেদুর স্রোতে বৃক্ষ দেখো …

পলিন কাউসারের গুচ্ছ কবিতা

চাঁদ ফোড়ন সাগরে ছিপ ফেলে একদিন চাঁদ ধরেছিলাম, ছোঁ মেরে ঢেউ নিয়ে গেলো চাঁদ, খুব দূরে, যেখানে ডুবে গিয়েছিলো একটি আস্ত মানুষ, সেখানে কি করে এলাম অমাবস্যা হয়ে, জানি না। …

মাসুদুল হকের সাম্প্রতিক কবিতা

মুখ মুখের বিচিত্র ধরন; জিভ দিয়ে স্বাদ নেয় ঠোঁট ভরে চুমু। দাঁত দিয়ে কামড়ে খায় নাক দিয়ে ঘ্রাণ আর চোখ দিয়ে রঙ এ মুখের বিচিত্র শখ; কণ্ঠের ধ্বনি জিভ গলিয়ে …

সরদার ফারুকের একগুচ্ছ কবিতা

শাহবাগ শেষমেশ কোথাও যাব না। রাক্ষসপুরীর এই দুর্ভেদ্য দেয়াল, প্রহরী, বন্দুক আমাকেও অসুখী করেছে পথের টহল কখনো থামিয়ে দিয়ে বলে, ‘এত রাতে কুনখানে যাও?’ এর নাম শাহবাগ? আটটা না বাজতেই …

নাজনীন খলিলের একগুচ্ছ কবিতা

মেয়েটা মেয়েটা আসতো মাঝেমধ্যে ছেলেটার খোঁজে। –এমন বললো পুরনো বাড়িওয়ালা। আসতো চোখভরা এক আকাশ মেঘ সাথে করে আচমকা বৃষ্টিতে চৌকাঠ ভিজে যেতো। সেই প্রবল বর্ষণের ভেতরে বিষণ্ণ পা টলোমলো করতে …

কবীর হোসেন তাপসের একগুচ্ছ কবিতা

জীবন জীবন হলো বাসনা-মাখা সাবান স্নান করব বলে যেই নেমেছি জলে ফসকে গেল হাতের মুঠি গলে!   ফিরে যাওয়া তুমি ফিরে গেলে মাতাল হাওয়ার দেশে বাতাসের ফুঁয়ে নবীন পাতার বাঁশী …

সেলিম রেজা নিউটনের গুচ্ছ কবিতা

কামিনীর ফুলের ইশারা এই কান্না অত দূরে পৌঁছাবে কি, বলো? এই যে পাশের ঘরে যত দূরে কচি কষ্ট বুকে নিয়ে সন্তান ঘুমায় অথবা যতটা দূরে ভেসে যায় বিমানের ইঞ্জিনের ধ্বনি? …

রিয়াদ চৌধুরীর গুচ্ছকবিতা

চিড়িয়াখানা চিড়িয়াখানায় প্রায়ই যাই বানরের খেলা দেখি, জিরাফের গলা দেখি গন্ডারের নিস্পৃহ দাঁড়িয়ে থাকা দেখি গাছ-গাছালির ভিড়ে সন্ধ্যাদেরও নামতে দেখি। মাঝে মাঝে কিছুই দেখি না কোন বেঞ্চিতে বসে অপেক্ষা করি …

Back to Top