সপ্তর্ষি বিশ্বাস-এর একগুচ্ছ কবিতা

প্রতিশ্রুত পাথরের গা’য়ে
কথা ছিল ফোটাবো গোলাপ –
আজ দেখি পাথরে পাথরে
শ্যাওলা ও সময়ের দাগ …

 

 

 

 

 

প্রতিশ্রুতির পাথরগুলো

প্রতিশ্রুতির পাথর গুলো
পথের পাশে ছড়িয়ে রেখে
নিদ্রাবিহীন নদীর ধারে
ঘুমিয়ে ছিলাম কাল সারারাত…
ঘুমন্ত সেই রাত্রি জুড়ে
বুকের নরম মাংস খুঁড়ে
নৃত্যরতা ছিল আমার
জন্মগত মগ্ন বিষাদ–
কোথায় যেন যাওয়ার ছিল
বলার ছিল অনেক কথা,
কারোর চোখের অবাক হাসি
কারোর চোখের বিষণ্নতা–
কাউকে বুকে জড়িয়ে ধরে
কারোর স্বপ্নে আত্মরতি,
বুকের মাঝে পাথর শুধু
পাথর না’কি প্রতিশ্রুতি?
গ্রামবালিকার দুষ্টু হাসি
এবং কিছু অসভ্যতা–
পরীর দেশের মেয়ের কানে
বানিয়ে বলা প্রেমের কথা,
ভুল ঠিকানায় ফুল পাঠানো
বাচ্চা মেয়ের পুতুল খেলা ,
দীপাবলীর সাঁঝ লগনে
নদীর জলে আলোর ভেলা…
এই সমস্ত এ জন্ম নয়
এই জন্মের সমস্ত ভুল!
‘চিনতে বুঝি পারো না আজ?
আমি গো, সেই তোমার বকুল…’
বকুল! তুমি কোথায় ছিলে?
কোন প্রবাসে এতোটা দিন–
তাই কি আমার ঘুম হতোনা,
অনন্ত রাত নিদ্রাবিহীন?
হাতে তোমার আংটি বুঝি
সোনায় মোড়া বাসি প্রলাপ?
অনামিকায় দাগ ফেলেছে
যুগান্তরের সমস্ত পাপ?
এসো বকুল পাথর ভাঙ্গি,
কিংবা ভাঙ্গি প্রতিশ্রুতি …
মিলনে আজ বিনষ্ট প্রেম
প্রেম মানে কি আত্মরতি?

১৯৯২, করিমগঞ্জ, আসাম

 

হরিদাসের গুপ্ত কথা

হারিয়ে যাই চলো তেমন হলে
ব্রাত্য দিবস যখন রাতের কোলে
হারায় নিয়ে বিবর্ণ ডালপালা…
পাঠক তুমি এবং আমি কবি
ছড়িয়ে ধূলায় ধূসর যতো ছবি
পেরিয়ে যাই অতীত মোহ, মায়া–
ডিসেম্বরের হিম কুয়াশায় মাখা
রুগ্ন যতো বাদুড় মেলুক পাখা
তর্ক চলুক জ়াঁক্‌ দেরীদা নিয়ে…
শ্রান্ত লোকের ভিড়ের সঙ্গে মিশে
শস্তা কোনো রেস্তোরাতে বসে
পাঠক তুমি এবং আমি কবি
ঘুমিয়ে পড়ি নিজের সঙ্গে একা…
‘কবে’ ‘কোথায়’ প্রশ্ন থাকুক তোলা
শার্সি ঘিরে জমুক হলুদ ধুলা
সন্ধ্যে এসে বিকেল কে নিক‌ শুষে…
শঙ্খমালার রিডিং রুমে বসে
কি আর হবে অসার মগজ চষে?
ভালোই জানি রোমিও নই আমি
এবং জানি হ্যাম‌লেটও নও তুমি
হারিয়ে যাই তাই দুজনে চলো
পদ্যাপদ্য অনেক লেখা হলো
ঘুমাই চলো ভাড়াটে বোন নিয়ে…
ভয় পেয়োনা–ভয় পেয়োনা, প্রিয়
গন্ধবারি সঙ্গে করে নিয়ো–
যেথায় যাবো সে দেশ রমণীয়,
প্রসাধনের সময় তুমি পাবে–
‘কবে’ ‘কোথায়’ প্রশ্ন থাকুক তোলা
শার্সি ঘিরে জমুক হলুদ ধুলা,
সন্ধ্যে এসে বিকেলকে নিক শুষে…
সময় পোড়ে, বয়সও বাড়ে, সখা,
যাচ্ছে পুড়ে দাহ্য আয়ুর রেখা–
জীবন মাপি চায়ের চামচ দিয়ে…
জীবন শেষে মৃত্যু থাকে যদি
মরণ শেষে জীবন আছে নাকি
জান‌তে সে কোন্‌ গণৎকারকে ডাকি?
এই যে চলা শেষ হবে কোন্‌খানে?
পণ্ডিতেরা মুচ্‌কি হাসে দেখো–
ভাড়াটে বোন তাকায় ট্যাঁকের পানে…
হারিয়ে যাই তাই দুজনে চলো
পদ্যাপদ্য অনেক লেখা হলো
ঘুমাবো আজ সাগর জলে শুয়ে…
অতল জলে যাইবা যদি ডুবে
বলো তেমন মন্দ কি’বা হবে?
শংখমালার স্বর্ণালী উৎসবে
যাওয়ার যারা এখনো ঠিক যাবে…
বৃদ্ধ ধীবর লাশ আমাদের পাবে
মন্ত্রপড়ে বাঁচায় যদি তবে
আমরা তো আর যাবোনা ঐ পথে…

১৯৯৩, করিমগঞ্জ, আসাম

 

শুক-সারি

স্বপ্নে আমার মনের কোঠার শুক-সারিকে
অনন্ত রাত তারার আলোয় জাগিয়ে রেখে
শোনাও কথা আপনমনে কোন বিজনের…
স্বপ্নে দুচোখ যায় ভেসে যায় অন্ধজনের।
গ্রীষ্ম দুপুর আম কাঁঠালের গন্ধে নিবিড়
শীত সকালের নরম ঘাসে প্রথম শিশির
কিংবা অঝোর বাদলঝরা শ্রাবণ রাতে
এ শুক-সারি যেই বিজনের গল্পে মাতে
–সেই বিজনের হদিশ খুঁজে গড় ঠিকানা
অন্ধ পথিক, জন্ম থেকেই তোমার পথে…
এ শুক-সারি হয়তো জানে সেসব কথা,
শব্দ আমার সে শুক-সারি, সেই দেবতা।।

আদিলেখন:
২৬/০৫/২০০২ ফিরেলেখাঃ ২১/০৯/২০১০

 

মধুশ্রীর জন্য কয়েক লাইন…

গর্ভভার বহনের মতো কালাতীত কায়ক্লেশে তুমি
অন্তরালে নিবিড় মৃত্তিকা–
আমারো বেদনাগুলি ওতপ্রোত বহনের দায়
আপনার স্কন্ধে নিয়ে তুমি
কি সহজে পার হও ধু-ধু মাঠ সাবলীল পায়ে…
অথচ সিন্দুক ভেঙ্গে সকল গহনা নিয়ে সোনাপুর ইষ্টিশানে আমি
দোকান দিয়েছি আর জ্যোৎস্না, বেদের মেয়ে, সারারাত ফুর্তি লুটেছে
তথাপি দক্ষের যজ্ঞে মূর্চ্ছা গিয়েছো তুমি শিবনিন্দা শুনে…
কামনা করেছো মনে পরজন্মে আমি যেন কূলবধূ রাধা–
–হয়ে এসে ছুঁতে পারি এইজন্মে স্পর্শাতীত তোমার বেদনা…
আমিতো পুরুষ, হায়, বড়জোর সতীদেহ বহনের ভার নিতে পারি
প্রাণের লালনভার কোনো জন্মে কিছুতেই বহিতে পারিনা–

আদিলেখন:১১/০৮/২০০২ ফিরেলেখাঃ ২১/০১/২০১২

 

শেষ জাতকের শেষে

একটি ভোরের ছবি জাগে দূরে নদীর শিয়রে,
ঐতিহ্যের মতো শাদা রাজহাঁসগুলি
অবলীল জলের শরীরে
ভেসে যায় ঢেউয়ের নৌকায়–
ধীরে ধীরে চুড়িভাঙ্গা কাচের মতন
অন্তঃপুরে সকালের আলো এসে পড়ে।
এমন সকালবেলা তুমি
এখন কোথায় আছো, বলো,
অপর কোনোও দেশে–যেইখানে রাত্রি নেমে এলো?
সেখানেও নদীপারে তুমি অন্তহীন একা পদাতিক?
রাত কি রচনা করে
সূচীভেদ্য তোমার আঙ্গিক?
আরেক ভোরের ছবি জাগে চুপে স্মৃতির গভীরে
শেষ জাতকের শেষে
যে সকালে একা তুমি এসেছিলে ফিরে…

১২/১১/২০০৪ -ফিরেলেখা: ২১/০১/২০১২

 

অনুমান

মন্দিরের দরজার পারে
যে মানুষ আভূমি আনত
সে তোমাকে প্রকৃতই
জানতে চায় কি’না
সেইকথা তুমি শুধু জানো,
অন্যেরা ভংগীটির আবেদনবশে
অনুমান করে নিজ নিজ।
মন্দিরের চত্বরে যারা
রোজ রাত্রে আসে চুপিচুপি–
ছায়াশরীরের মতো অসম্ভব যাদের ফিসফাস–
–শীৎকার–গালাগালি–এবং পিপাসা–
তারাও তো জানতে চায় গহনে তোমাকে…
তোমার মূর্তি ভেঙ্গে সোনা খুলে নিয়ে
স্যাকরার কাছে বেচে মাল টানে যারা–
–অথবা যাদের ছুরি মাঝে মাঝে বিঁধে যায়
অপরের বুকে কিংবা পিঠে
তারাও যে অভ্যন্তরে জানতে চায় তোমাকেই, হায়,
নিজ মনে তুমি জানো সেই গুহ্য কথা…
কেবল তাদের ভংগী অন্যরূপ বলে
অপরে জানেনা সেই বাসনার কথা…

আদিলেখন:১২/০৫/২০০৬ ফিরেলেখাঃ ২১/০১/২০১২

 

শৈল শিখর পথে

এই নীরবতা শৈল শিখরে উপমার মতো যেন–
নিয়ত নীরব শৈলশ্রেণীও চিনতে পারেনা তাকে,
এই নদীস্রোত শীতকাল এলে তুষার-শরীর নিয়ে
থমকে দাঁড়ায়, –বসন্তে ফের শূন্য প্রতিটি গাছে
নূতন পুষ্প, নূতন পরাগ–নীরবের উৎসবে
উড়ে আসে সেই পাখিরা যাদের ডানার আন্দোলনে
সারারাত জেগে বাঁকাচাঁদ একা ঝর্ণার গীতি শোনে…
সেখানে একটি একলা প্রাসাদে, ঘূণে-ধরা কামরাতে
জেগে যে একাকী নীরবের এই কথাগুলি লিখে রেখে
একদিন যায় শিখরের পথে অমাবস্যার রাতে–
দেখবো কী তাকে, স্বপ্নে কখনো? জানিনা, সকালে জেগে
পায়ের চিহ্ন আঁকা আছে দেখি অন্ধ এ চেতনাতে।।

 

আদিলেখন:১২/০৬/২০০৬ ফিরেলেখাঃ ২০/০৯/২০১০

 

আছে অঞ্জলী মোর …

সুরগুলি নদীজলে ভেসে যায় যদি
ফিরায়ে আনিতে চেয়ে
সন্ধ্যাবেলা যেয়োনা নদীতে,
বীণা যদি ভেঙ্গে যায় যাক–
কী কাজ বীণায় আর?
শোনো সুর, বাজে সুর, বেজে চলে আকাশে আকাশে…
সকল প্রদীপগুলি নিভে গেলে
তাতার বাতাসে,
তবুও স্ফুলিঙ্গ জেনো লীন হয়ে আছে চুপে পাথরের কাছে…
সকল শব্দের কাছে তাই আজ পাকাপাকি ছুটি চেয়ে নিয়ে
দাঁড়াই দুজনে চলো ছোটো এই শান্ত জানালাতে…
জাগুক্‌ স্ফুলিঙ্গ লীন
পাথরের ঘাতে প্রতিঘাতে–

আদিলেখন:১১/০৯/২০০৬ ফিরেলেখাঃ ২১/০১/২০১২

 

কথার কাঙ্গাল

বাক্য যথেষ্ট বলা হয়েছে কী?
না’কি এই দৃশ্যাবলী খুঁড়ে
তুমি চাও আরো বাক্য
তুলে আনি ডুবুরীর মতো?
আনা যায়, তবে,
ভয় করে মন্থনের ফলে
যদি সে গরল ওঠে
অন্ধকার থেকে…
সে গরল অমৃতের মতো
পান করে নিতে জানে
যেজন নীরবে
সেইজন ভিক্ষাজীবী–
শান্ত, শিব, রুদ্র মহাকাল;
চড়কপূজার ভিড়ে
আমি এক রবাহূত শুধু–
অপব্যয়ী আমি এক
কথার কাঙ্গাল।।

আদিলেখন:১১/০৯/২০০৬ ফিরেলেখাঃ ২০/০৯/২০১০

 

বাড়িফেরা

এ জীবনে কতো নদী আজো

এ জীবনে কতো নদী আজো
মনে পড়ে পেরোনো হলোনা–
অন্ধকার সন্ধ্যা নেমে এলো
মুছে গেলো সাঁকোর ঠিকানা।
নদীর শরীরে ভেসে দূরে
চলে গেলো প্রিয় নক্ষত্রেরা
নিরুদ্দিষ্ট মাঝিটিরো তাই
হলোনা এখনো বাড়িফেরা …
অমল ধবল তার পাল
বাঁধো তুমি, আমি ধরি হাল…

আদিলেখন: ২৫/৯/২০০৬ ফিরেলেখা:২৪/০৯/২০১০

 

দায়,আনন্দের …

নিভৃত বেদনাগুলি চুপে
লিপিবদ্ধ করে রাখা, সখা,
সে’ও এক আনন্দেরি দায়…
নাহলে বাউল গায়
ঝড়ে-জলে-রোদে-দ্বিপ্রহরে?
ঘাটের ভগ্নসিঁড়ি
কেন ছুঁয়ে যায়
নদী প্রতি মধ্যযামে, আর
কি অতল কথা বলো
নদীকে আকাশ বলে
বাদলের প্রতিটি কণাতে?
কেনবা জোনাকি জ্বলে
বাঁশঝাড়ে– কৃষ্ণপক্ষ রাতে?
আমাকে ঘাসের দেহ বুনে দিও, সখা,
পরজন্মে–পরজন্মান্তরে
মাটির আনন্দগান
প্রাণ হবে আমার শরীরে…

আদিলেখনঃ:২৪/৯/২০০৬ ফিরেলেখা:২৪/০৯/২০১০

 

শ্মশানে ও সমূহ কবরে

ছেলে মরে গেছে কাল। আজ তারই খাকিজামা গায়ে
তারই অটোরিক্সা নিয়ে বাপ
ভাড়া খুঁজে বেরিয়েছে পথে।
দশটাকা বেশী ভাড়া দিয়ে
হতবাক তাকে একা
ফেলে রেখে তেমাথার মোড়ে
ট্রাফিক সিগন্যাল মেপে
বড়রাস্তা পার হতে হতে
অকস্মাৎ টের পাই মনে
সকল পুষ্পগুলি শুধু তারি তরে
সান্ত্বনার বার্তা হেন
ফুটে আছে ফুল হয়ে আজ
শ্মশানে ও সমূহ কবরে।।

আদিলেখন:১৩/১০/২০০৬ ফিরেলেখা:২৪/০৯/২০১০

অতিথি

নারী। কে নাড়ে এ দরজার কড়া?
তাতার বাতাস নাকি কোনো
রাতের অচেনা হরকরা?
কে নাড়ে এ দরজার কড়া?
ঝড়ো রাতে পাহাড়ি কুকুর??
যেই হোক‌; আজ রাতে তুমি–
কিছুতেই দরজা খুলোনা!
পুরুষ। যদি সে পথিক হয় কোনো…
পথভ্রষ্ট একা পদাতিক?
নারী। সেই ক্ষেত্রে পাপ হবে। হোক‌।
এতো পাপ এতোদিন ধরে
নীরবে সয়েছি একা একা,
এই পাপে তার বেশী আর
মনে হয় আহত হবোনা–
পুরুষ। যদি সে প্রেমিক হয় সেই?
তোমার ঠিকানা খুঁজে খুঁজে
পথ ভুলে গিয়ে অবশেষে
ভুল পথে এসেছে এখানে?
শুনেছি সে এভাবেই আসে…
নারী। আর যদি হয় সেই লোক?
যদি তার সঙ্গে থেকে থাকে
মারাত্মক সেই পরোয়ানা?
পুরুষ। তাহলে এ ঝড় থামলেও–
তাহলে এ রাত ফুরালেও–
কোথাও যাবেনা এই লোক,
পাটাতন ক্ষয়ে যাবে ক্রমে…
ভেঙ্গে যাবে জানালা দরোজা…
তখনি সে হানা দেবে এসে
সঙ্গে নিয়ে সেই পরোয়ানা…
নারী। সেইদিন সব মেনে নেবো–
চলে যাবো বন্দীসাজে সেজে…
আজ রাতে কিছুতেই তুমি
কোনোভাবে দরজা খুলোনা–
#
সহসা বাতাস ফুঁসে ওঠে।
বাজ পড়ে কাছেই কোথাও।
দরজার পাল্লা ভাঙ্গে আর
সেই লোক ঢুকে পড়ে ঘরে।
#
নারী। এইবার যেতে হবে তবে–
রইলো তোমার ঘর আর
রইলো এ তালা আর চাবি…
খোকা যদি প্রশ্ন করে, তবে,
সত্যকথা বলে দিও তাকে।
তুমিও আমাকে কোনোখানে
কোনোদিন অযথা খুঁজোনা–
পুরুষ। কেন যাবে? কেন যাবে তুমি??
অতিথি তো যেতে বলছেনা–
নারী। তুমি তাকে চেনোনি তাহলে–
পুরুষ। হতে পারে। তবু সে তোমাকে
তার সাথে যেতে তো বলেনি–
নারী। তবু, হায়, যেতেইতো হবে …
সে যদি ভিতরে আসে তবে
অন্য কোনো উপায় থাকেনা–
তাইতো বলেছি আমি কতো
কোনোভাবে দরজা খুলোনা…
পুরুষ। আমি তো খুলিনি কিছু নিজে–
ঝড় এসে খুলে দিয়ে গেছে…
নারী। যে করেই হোক‌, হায়, দেখো,
সে মানুষ ভিতরে এসেছে–
পুরুষ। সে কি ঠিক চিনেছে তোমাকে?
নারী। সে আমি জানিনা ঠিক, তবে
আমি তাকে সঠিক চিনেছি…
#
তারা চলে যায় দ্রুতপায়ে–
মিশে যায় ঝড়ে ও বাতাসে,
পুরুষটি একা বসে বসে
সাড়ায় দরজা আর দেখে
বৃষ্টি পড়ে ঝড়ের আবেগে।

আদিলেখন:৪/১১/২০০৬ ফিরেলেখা:৩০/০৯/২০১০

উৎসর্গঃ রবার্ট ফ্রস্ট, আলোক সরকার

অলিখিত গানে

তোমার ইংগিত আমি পথে পথে বৃথাই খুঁজেছি,
বৃথাই লিখেছি কথা
মনে করে ঐগুলি তোমাদ্বারা প্রেরিত বারতা।
‘আমিই বার্তা তব–
আমার দুঃখ-সুখ-শ্রাবণের রাত অভিনব
তোমারি প্রেরিত পত্র’–
এই সত্য অভ্যন্তরে যেইজন জানে,
তোমার বার্তাগুলি ফুল হয়ে ফোটে দেখি
সে কবির অলিখিত গানে।।

আদিলেখনঃ ৪/১১/২০০৬ ফিরেলেখাঃ৩০/০৯/২০১০

 

আবারো ভাসাই ডিঙা

কোথা যে গল্পের শুরু
কোনখানে শেষ–
সূর্য্য নিভে গেলে পরে রোজ
মনে হয় দিনগুলি
অচেনা, বিদেশ।
কোথাও তোমার নদী
অদ্যাবধি ছুটে চলে
মোহানার দিকে…
জলোচ্ছাসে নৌকাগুলি
ডুবে যায় তবু
আবারো ভাসাই ডিঙা,
হাসে বৈহাসিকে…
প্রতি ঢেউয়ে বাক্য শুধু,
প্রতি শব্দে জন্ম-মৃত্যু-জরা–
প্রাণ পায় ধীর লয়ে
বেহাগের নিবিড় আলাপে–
শেষ খেয়া ভেসে গেছে যদি
কি করে পথিক আর
নিজ দেশে যাবে?

আদিলেখন: ১৫/১/২০০৭ ফিরেলেখা:২৫/০৯/২০১০

 

আনা কারেনিনা

এইমাত্র রেললাইনে ঝাঁপালো যে মেয়ে
যদিও দেখিনি তাকে, তবু
মনে মনে চিনি বহুকাল।
কেবলি প্রেমের টানে এতোজন্ম পেরিয়ে সে এখানে এসেছে…
নাকি সে প্রেমের সংজ্ঞা ভুলে গিয়ে ক্রমে
নিজের মৃত্যুর সাথে অসম্ভব প্রেমে পড়ে গেছে?
অথবা সে চিনেছিল ঠিক ষ্টেশনের মত্ত ভিড়ে সঠিক আমাকে?
তাই আমি চাই নাই কোনোদিনই জাতিস্মর হতে–
আজ আর ঘরে ফেরা হবেনা কিছুতে,
মনে মনে আজ আমি কোনো ট্রেনে চড়ে
‘পথের পাঁচালী’ আর রবি ঠাকুরের সব গানগুলি নিয়ে
যেদিকে দুচোখ যায় চলে যাবো একা…
এই জন্ম পার হয়ে আমি
হৃদ্‌রোগে মারা যাবো ‘কাটাখাল’ নামের ষ্টেশনে…
পরজন্মে তার সাথে দেখা হবে ফের, শেষদৃশ্যে,
‘জাটিঙ্গা’ নামের সেই পাহাড়ি ষ্টেশনে…
তাই আমি কোনোদিনই চাই নাই একবিন্দু জাতিস্মর হতে…

আদিলেখনঃ:১৬/১/২০০৭ ফিরেলেখা২৫/০৯/২০১০

 

এ জীবনে প্রাপ্য আমাদের

যতোটুকু মৃত্যু, প্রিয়, এ জীবনে প্রাপ্য আমাদের
তারচেয়ে বেশী মৃত্যু অসহায় এ দিনিলিপি জুড়ে
জেগে থেকে বলে চলে অযাচিত কাহিনী ক্ষয়ের,
তবুও পুষ্প রোজই জাগে দেখি ভোরের শিয়রে।
যতোটুকু মৃত্যু, প্রিয়, এ জীবনে প্রাপ্য আমাদের
তার বেশী কেন পান-করা , কাঁপা হাতে, ভিখারী গন্ডুষে ?
রূপের অন্তিম সত্য প্রতিভাত অমৃতে না বিষে?

আদিলেখন:৫/২/২০০৭ ফিরেলেখা:২৫/০৯/২০১০

 

সৃষ্টি ও স্থিতির থেকে

প্রলয় খুলেছে চুল অকস্মাৎ নদীর শরীরে–
একা এক মাঝি সেই রূপে মুগ্ধ হয়ে
ডুবে যাচ্ছে অনর্গল নিজেরি অতলে …
মাঝি কি দেখেছে মেঘ? নাকি মেঘে মেঘে
ভাসমান শুভ্র বকগুলি মেঘান্তরে ডেকে নেয় তাকে?
মাঝি কি দেখেছে মেঘ? নাকি মেঘে মেঘে
খুলে যাওয়া তীব্র কেশদামে
বিপর্যস্ত বিজলীর টানে
মাঝি কি চলেছে তবে জন্মান্তের পানে?
সাংকেতিকলিপি এই চোখ বুঁজে দেখে
কিছুই বুঝিনা; শুধু টের পাই মনে
সৃষ্টি ও স্থিতির থেকে
চেতনার ঢের দায় যেন
অকস্মাৎ নেমে আসা তীব্র এই প্রলয়ের কাছে…

আদিলেখন:২০/০৪/২০০৭ ফিরেলেখা:২৫/০৯/২০১০

 

ফাঁকি

বলেছিলাম বৃষ্টি এলে
হারিয়ে যাবো শহর ছেড়ে,
ভিজতে ভিজতে হারিয়ে যাবো
মাঠের মধ্যে ছাতা ছাড়াই…
কথা ছিল কেউ যাবে না–
কেবল যাবে গান ক’খানি,
বেসুরো আর বেতাল কণ্ঠে
গাইতে গাইতে রবীন্দ্রগান
আমরা দুজন হারিয়ে যাবো–
হারিয়ে যাবো বৃষ্টি এলেই…
এইতো সেদিন বৃষ্টি এলো,
বৃষ্টি এলো মুষলধারে–
খোকা এসে বল্লো আমায়:
‘চলো এবার হারাই তবে–’
তবুও আর যাইনা দেখে
সজল চোখে বল্লো খোকা:
‘তোমার কথায় ফাঁকি ভীষণ…’
হারিয়ে যাওয়া হয়নি বলে
উথাল পাথাল মনখারাপে
জানলা দিয়ে হাত বাড়ালো
উতলধারা বাদল ছুঁতে।।

আদিলেখন:২০/০৪/২০০৭  ফিরেলেখা:২৫/০৯/২০১০

 

ঊর্ণনাভ

নিজের অতলে যতো যাই
ততো দেখি পিপাসা মেটেনা।
কি দিয়ে গড়েছো তুমি, কেন যে আমাকে–
কেবলি জানতে চেয়ে
নিজেকে আঘাত করে নিজেরি আড়ালে
টের পাই তুমি ঊর্ণনাভ–
আমি পতঙ্গের মতো
বাঁধা পড়ে আছি তব জালে।।

আদিলেখন:২০/০৪/২০০৭ ফিরেলেখা:২৫/০৯/২০১০

 

শাস্তি

যে সকল শাস্তি তুমি এতাবৎ নিজেকে দিয়েছো
সে সব আমারি প্রাপ্য গহন প্রস্তাবে।
পিপাসার্ত, তবু আমি
ফিরিয়ে নিয়েছি মুখ
কিসের এক তীব্র অভিমানে…
সতত প্রতিজ্ঞা নিই
অনর্থক এ অভিমান ভুলে
তোমার নিকটে যাবো,
শাস্তি নেবো জানু পেতে বসে…
তবুও ঢেউ এর মতো
অসহায় এই অভিমান
সহসা লাফিয়ে ওঠে
চাঁদের প্রবল টানে, জোয়ারের রাতে…

আদিলেখন:২০/০৪/২০০৭ ফিরেলেখা:২৫/০৯/২০১০

 

ঈশ্বরের অস্তিত্বকে নিয়ে

অফিস পাড়ার মোড়ে মলিন পোশাকে
যে লোকটি বিলিকরে নানারূপ ছাপা বিজ্ঞাপন,
আমি তাকে পার হয়ে রোজ
অফিস চত্ত্বরে ঢুকি সকাল দশটাতে।
ল্যাপটপ কম্পুটার খুলে
ডলার-হাঙ্গরদের মুনাফা বাড়িয়ে চলি আর
তার কথা ভাবি ফাঁকে ফাঁকে।
অবশ্যই তারো একটি বৌ আছে আর
একটি দু’টি ছেলেমায়ে আছে,
তারাও সন্ধ্যাবেলা পথচেয়ে থাকে তার
আকাঙ্ক্ষায়–পাখিদের শিশুদেরি মতো …
ক্যান্টিনে ‘লাঞ্চ‌’ খেতে বসে
ব্যতিব্যস্ত মুখ তার
‘বাবা, কি এনেছো আজ’
শিশুর এই প্রশ্নটির মুখে–
চোখে ভাসে দুঃস্বপ্নের মতো।
‘লাঞ্চ‌’ সেরে ‘পার্কিং’এ গিয়ে
সিগারেট টানি আর
সন্দিহান হতে থাকি ঈশ্বরের অস্তিত্বকে নিয়ে।
উৎসর্গঃ অভিরূপ সরকার

আদিলেখন:২২/০৫/২০০৭ ফিরেলেখা:২৫/০৯/২০১০

 

গানগুলি

গানগুলি ফিরে আসে সঙ্গে নিয়ে নিজ নিজ নিহিত আকাশ।
কে আজো বেড়ায় ঘুরে সেসব আকাশ নিয়ে একাকী, বিজনে…
সে আকাশ ছুঁতে চেয়ে মাঝপথে কাটা পড়ে আজো কার ঘুড়ি?
সে কোন্ নক্ষত্র আজো সেইসব আকাশের নিভৃত প্রহরী?
গানগুলি ফিরে আসে সঙ্গে নিয়ে নিজ নিজ নদীর কাহিনী।
ঢেউগুলি ভেঙ্গে পড়ে ঘাটে ঘাটে, শ্যাওলাঢাকা সোপানে সোপানে…
কে আজো সে কার তরে ঘুরে ফেরে জনশূন্য নদীঘাটে একা?
কে আজো সে কার তরে চিঠি লিখে সেইসব ভুলে যাওয়া গানে?
বেজে চলে গানগুলি মনে মনে–মালকোষে, ইমনে, বেহাগে…
সে গানের পথে কারা অদ্যাবধি রাত্রি জেগে অপেক্ষায় থাকে?

আদিলেখন:১৬/০৬/২০০৭ ফিরেলেখা:২৫/০৯/২০১০

 

ফেরারী বাসব

এই সেই ফেরারী বাসব
শালিকে গলায় টিপে করে রাতে
বৌ-বাচ্চা সব ফেলে নিরুদ্দেশ হয়েছিল কবে…
সেই থেকে এ গ্রামের লোক
বাসবের আর কোনো খবরই জানেনা।
ইতিমধ্যে বাসবের বৌ ছেলেমেয়ে
এই গ্রাম ছেড়ে গেছে বাসবের শ্বশুরবাড়িতে…
সেইথেকে এ গ্রামের লোক
তাদেরো অন্য কোনো খবরই জানেনা।
যদিও ঘুঘুর বাসা সারা গায়ে তবু
এখনো ভিটেটি আছে কোনোমতে টিকে…
এই সেই ফেরারী বাসব
এইমাত্র একা সেই ভিটেটিতে বসে
বিড়ি খাচ্ছে নিজ মনে আর
অপলক চেয়ে দেখছে জংলা উঠোন জুড়ে
কাক আর শালিকের মেলা, ছেলেখেলা…
পাকানো দড়ির মতো হাড়ের শরীর আর একমুখ কাঁচাপাকা দাড়ি গোঁফ নিয়ে
কি কথা সে ভাবে আজ এখানে তন্ময় হয়ে বসে?
অথচ মোক্তার বাবু সঠিক চিনেছে তাকে এক ঝলক দেখে,
থানায় খবর গেছে, দারোগাও দলবল নিয়ে
এইমাত্র এসে পড়লো বলে…
অথচ বাসব আর এসব খবর কিছু এখন রাখেনা–
সে কেবল একা এই ভেঙ্গেপড়া দাওয়াটিতে বসে
সামনে তাকিয়ে থেকে একমনে বিড়ি টেনে চলে।

২৫/৫/২০০৯

 

প্রেত

শুনেছি ভূতের গল্পে প্রেতিনীরা এরকম করে:
মধ্যরাতে খালে বিলে অথবা হাওড়ে
আলেয়ার মতো জ্বলে পথিককে চেনাপথ থেকে
দূরে টেনে নিয়ে তাকে কেবলি ফিরিয়ে আনে
পুনঃপৌনিকের মতো একই স্থির বিন্দুটির দিকে…
প্রতিজন গৃহস্থের কাঁধে অনুরূপ প্রেত যেন তাকে
দিনশেষে নিয়ে আসে ধরে সেই একই চেনাপথে
একই বৃত্তে, একই ঘরে, সেই একই আলোকে আঁধারে…
ভূতের গল্পের শেষে রাত ভোর হলে
মৃতদেহ ভেসে ওঠে মাঠে কিংবা জলের শরীরে
গৃহস্থের গল্পটিতে সেই প্রেত নিজে
মন্ত্রবলে ঝর্ণা হয়ে গৃহস্থের চোখের আড়ালে
আকূল গৃহিণীহেন সারারাত জেগে থাকে
গৃহস্থের পরিশ্রান্ত ঘুমের শিয়রে।।

১৩/০৪/২০০৯, করিমগঞ্জ

 

সকল চিঠির শেষে চুপে

দেবদারু পাতাদের মতো সহজ ও স্বাধীনভাবে তুমি
আমাকে দেবে না পত্র নিদাঘ দুপুরে কিংবা
মেঘেঢাকা গোধূলি বেলাতে?
অপরের পত্র ঢের জমে গেছে চিঠির বাক্সে আর বালিশের নিচে–
তোমারি পত্র শুধু বাহকের বিভ্রমের বশে
এখনো অপর চিতা কেবলি জ্বালিয়ে তুলছে অপর শ্মশানে…
আমার গরাদভাঙ্গা জানালার পাশে
দিবারাত্রিগুলি যেন সারিবদ্ধ পিপীলিকা হেন
এগিয়ে চলেছে কোন গর্ত থেকে অন্ধকার খাদ্য খুঁজে নিতে…
এখন বৃষ্টির শেষে রোদও এসে ক্রমে
ঢলে পড়ছে সারিবদ্ধ সুপারীর গাছে…
এবং এখনো আমি প্রতিজন হরকরার কাছে
সকল চিঠির শেষে চুপি চুপি প্রশ্ন করি তাকে:
‘শুধু এই? আর কোনো চিঠিপত্র আছে?…’

২৫/০৫/২০০৯

 

সন্ততিকে

তোদের সমূহ বোঝা বয়ে নেবো আমি
ঠোঁট দিয়ে শুষে নেবো তোদের বেদনা
তোদের লজ্জা আর সকল বিভ্রম
ডানায় জড়াবো আমি পালকের মতো…
তোদের কল্যাণহেতু অতোদূরই শুধু
একটি জীবনে আমি পারি করে যেতে।
তারপর ঘড়িটির কাঁটার নিয়মে
তোরাও অনাথ হবি আমাদেরি মতো–
বেদনা তুষার হবে, শীতে, জমে জমে…
দাগ থেকে যাবে আর শুকাবে সে ক্ষত।
যদিও গোপনে আমি তোদের কল্যাণে
দীপ জ্বেলে রেখে যাবো সকল মন্দিরে
তবুও তোদের মৃত্যু তোদেরি দুয়ারে
হানা দেবে একা তার কালো ঘোড়া চড়ে…

আদিলেখন:২৪/১২/০৯ ফিরেলেখা:২৯/১০/২০১০

 

দাহ্যাতীত চারণের হাত…

আমার ফেরার দিন দাগ দিয়ে রেখো ক্যালেন্ডারে,
সংগ্রহ করে রেখো চমকে ওঠার মতো নানা উপহার–
আমার পথের পাশে প্রতিখানি ধূসর দেওয়ালে
লিখে রেখো প্রিয় গান মৃত চারণের…
দগ্ধ পদছাপগুলি সুচিহ্নিত করে রেখো নিশান উড়িয়ে…
হারানো অর্গ্যানগুলি খুঁজে এনে গেয়ে উঠো ভুলে যাওয়া গান…
টাঙিও স্বপ্নগুলি গাছে গাছে, পথের কিনারে…
যদি পারো তবে আমি এনে দিতে পারি
খোয়া যাওয়া নাকছাবি
সিন্ডারেলা-চটি আর
অপেক্ষায় নিভে যাওয়া তীব্র শীতরাত–
যদিও দুঃস্বপ্ন লেগে ঝল‌সে গেছে, তবু
দাহ্য ঠোঁটে ছুঁয়ে দিও পথে
গোপন অক্ষরে বোনা
দাহ্যাতীত চারণের হাত…

২৪/১২/২০০৯ ২১/০১/২০১২

 

খুকির তৈজস

খুকি ক্রমে চিনে নিচ্ছে কোন্‌ জিনিস কার…
যেমন হাতের কাছে কোনো বই পেলে
দৌড়ে আমাকে দিয়ে বলে ওঠে ‘এ-ই-টা তোমার’…
পেন্সিল-কলম পেলে
ছুটে দিয়ে আসে তার সাত বছর বয়সী দাদাকে–
ফিতে ও চিরুণী মাকে, চশমা ঠাকুমাকে–
কাজের মহিলাটিকে ঝাড়ু ও সাবান…
আরো একটু বড় হলে নিজেরো এমনি কিছু
সংগ্রহ হবে তার যে রকম হয় সকলেরই–
এবং বদলে যাবে ক্রমে ক্রমে পুরাতন মালিকানাগুলি…
বইগুলো পড়ে আছে, বাবা আর নেই–
মা গিয়েছে–
চিরুণী রয়েছে প’ড়ে দাঁতে নিয়ে কবেকার চুলের সম্বল–
…এই সব থেকে ক্রমে খুকিও কি চুপে শিখে নেবে
এ সবই ‘পরের জায়গা’, অপরের ‘জমি’…
ঘর গড়ে থাকি তবু
অপর কোথাও আছে আমাদের স্মৃতি ও স্বভূমি?…

৫/১২/২০১০ ২১/০১/২০১২

 

Facebook Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top