দু’টি কবিতা: শুভ্র দাস

টেবিল

করোনার নিঃশব্দ পদধ্বনি,
বসেছি তাই দূরে দূরে,
সুপ্রাচীন টেবিলটা ঘিরে,
যেখানে রোজ জন্ম নেয় জীবন।
কোনায় পুরণো ক্ষত – চিরন্তন দংশন এক;
সেই শিশুর, এক দুপুরের লুকোচুরির চিহ্ন
যার ধরা আছে পরিণত হাঁটুতে ।

একান্তে, হারানো প্রেম আর
সুখস্বপ্নরা এখানে ঠোঁট রাখে
গরম চায়ের কাপে, আর সস্নেহে
আমরা হাত রাখি সন্তানের কাঁধে ।
এই টেবিলেই শিশু হয় পুরুষ, হয় নারী;
দূর থেকে তাদের বাড়ানো হাত
মাঝে মাঝে ধরি, হঠাৎ যখন কাঁপা পায়ে
জড়াজড়ি করে আদুরে কুকুরের অবলম্বন ।

তুষারে, বর্ষণে, এ টেবিল
ধূমায়িত খিচুড়ির মতো আশ্রয়;
বিষন্ন যুদ্ধারম্ভে, সমাপ্তির ক্লান্তিতে,
আতঙ্কিতের সহায় হয়ে
এ টেবিলেই জন্মেছে সোনালি ভবিষ্যৎ।
গণসংগীতে গলা মিলিয়েছি অনেকে,
বিমর্ষতার সুরে নীরবে প্রহর গুনেছি, একাকী।
প্রার্থনার কৃতজ্ঞ করজোড়ে হয়তো
এখানেই সব হবে ইতি,
হাসি কান্নার রেশে চলে যাবো,
এ টেবিল ছেড়ে, চিরতরে।

 

দুর্গার টুইট

আমাকে হয়তো এখনো খুঁজছো তুমি,
যেভাবে খুঁজেছো অতীতের নিজেদের।
সমুদ্র স্নানে বিদায় নিয়েছি আমি,
দেখা আর হবে না এবছরে আমাদের।

সবলা এখন তোমরা সবাই জানি,
অতিমারী দূর সহজেই হয়ে যাবে।
ভালোবাসা দিয়ে বেঁধে রেখো গ্রামখানি,
শক্তি যা চাও নিজের হাতেই পাবে।

 

শুভ্র দাস

১৯৮৫ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস। গত ২৭ বছর আছেন ডেট্রয়ট শহরে । পেশায় মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং -এর প্রফেসর। জন্ম ও ছোটবেলা কেটেছে কদমতলা, হাওড়ায়। পড়াশোনা খড়্গপুর আই. আই. টি. ও আইওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। নেশার মধ্যে ছবি তোলা ও ছবি আঁকা, লেখা লেখি, ঘুরে বেড়ানো, নাটক ও পলিটিক্স । বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে রাজনৈতিক পরিবর্তন আনার কাজে বিশেষ ভাবে জড়িত।

Facebook Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top