গাজী রফিকের একগুচ্ছ কবিতা

প্যানোরমা 

তোমাকে দেখতে আকাশে রেখেছি চোখ
তোমাকে শুনতে বাতাসে পেতেছি কান!

হাজার তারায় খুঁজেছি তোমাকে
চাঁদের অবর্তমানে;
তোমার জন্য রচনা করেছি গান।

তুমি কি কাহারো প্রাণের সারথি … আদৌ
… সত্যি সত্যি … বলো ! শুনছ কি সুদূরতমা….
নাকি এ হৃদয়  শুধুই এঁকেছে …
স্বপ্নের প্যানোরমা !

 

সিম্ফোনি

শ্রবণেন্দ্রিয়ের সঙ্গে হৃদযন্ত্রের যে অন্তর্যোগ, তা বুঝলাম
তোমার কণ্ঠস্বরে !  তোমার সে সিম্ফোনি ছিল অনিবার্য মৌল তার !
ভোকাল থেকে শ্রুতি, এবং তা থেকে ঠি-ক সংবেদন, কী অভূতপূর্ব ;
অন্তরোধীত এ পুরো প্রকল্পটি থেকে যা প্রমাণিত হয়;
না কোনো গান নয়,
না বিটোফেন,বাখ, রবীন্দ্রনাথ,
না নজরুলের ক্লাসিক্যাল কোনো সুর ! তোমারই কণ্ঠনিঃসৃত মধু
শুধু, একটি ভীষণ মহৌষধ  হতে পারে; এ পৃথিবীতে, কতো
বিপর্যয়ে নুয়ে পড়া, ক্লান্ত-ক্লান্ত মন, কতো আশা, স্বপ্ন তার উড়ে গেছে,                                                                                                                            পায়নি সে শুশ্রূষার ভাষা !
পাখির চোখের মতো এমন কারো চোখে,
দূর আকাশের তুমি কি সে-ই তারা ছিলে কিনা,
প্রেম অপ্রেমের অধিক সত্যে, নীল—যেখানে আদিগন্ত বেদনাবিধুর !

 

প্রাণসূত্র 

অঙ্ক সূত্রে বস্তু মিলেছে ঢের
আজ তাহলে প্রাণসূত্রে, প্রাণ-রহস্যে যাবো
কাবেরী না সরস্বতীর, কোন সে নদীর পারে !
ডাক দিয়েছে প্রাণ সজনী, প্রাণের অঙ্গীকারে !

 

প্রেম

মিথ্যায় মন, যেমন নিষ্ঠুর হয় ;
প্রেমের হৃদয় তেমনই কোমল !

কারণ,
প্রেম চিরকাল  সত্যনিষ্ঠ
মিথ্যাচরণ নয় !

—–
গাজী রফিক
গাজী রফিকের জন্ম: ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৮। পড়াশোনা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি আশিদশকের একজন  কবি। তাঁর কবিতার বই: চেতনার ফুল (১৯৮২), আদিঅন্ত পরাধীন (১৯৯০), মানবমুক্তির মন্ত্র (১৯৯৬), নব্যরূপান্তরবাদ ও অপ্রচলিত কিছু কবিতা (২০০৩), কালো মেয়ে কবিতা (২০০৯), পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ কবিতা (২০১১), নির্বাচিত কবিতা (২০১৪), গাজী রফিকের কবিতা (২০১৪)। সম্পাদিত গ্রন্থ: কবিদের প্রেম (১৯৯৬), রূপান্তর আশিদশকের কবিতা (২০০৩)। 
গবেষণাঃ ১.তাঁর উদ্ভাবিত ‘তাপ ও ওজন পদ্ধতি’ প্রয়োগ করে রান্নার স্তরে চালে অতিরিক্ত জল ব্যবহার করলে ১৩-১৫% চাল অপচয়ের একটি নতুন ফাইন্ডিংস ২০১২ সালে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। ২. ২০১২-১৯ সালের মধ্যে গমের আটার সঙ্গে রাইস ব্রানের আপেক্ষিক মিশ্রণে ওরিফোকোট (OryFoCoT) নামে আটার একটি কম্বিনেশন করেন তিনি। এর রোগপ্রতিরোধী গুণ রয়েছে এবং এতে গ্লুটেনের উচ্চমাত্রা সহনীয় স্তরে নেমে আসে। 
Facebook Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top