পিয়াস মজিদ
তোমার গিলোটিনে
একটানা চব্বিশ বছর
ক্রমাগত গোধূলিপাত।
সন্ধ্যালহরিও বেঁকেচুরে যায়।
সে থেকে থেকে দেখে
নিঝুম নদীগুলো
দাউ দাউ অগ্নিতে
আত্মহত্যা করে।
তৃষ্ণার মওসুমে
সুরভির কাননে শুধু
গরম পানির ঝরনা।
লাইটপোস্টে ঘনীভূত
অন্ধকারমালা।
তারপর বনভূমির সবুজ মোহর
এবং কালো কোয়েলিয়া সাথে নিয়ে
আমি যাব তোমার গিলোটিনে।
হব বসন্তবলি।
কোমলগান্ধার
রাত্রি।
মরুভূমি ছেড়ে যাই
ওই দূর
মালিনীর
অববাহিকায়।
তার জলে
হাঁস হয়ে ঘুরে বেড়ায়
আমার দগ্ধ চৈতন্য।
ভোর।
এখন মালিনীই
মূলত মরুভূমি।
বেছে বেছে তোমার
প্রতিটি পতনের পথেই
জ্বালাব প্রাণের প্রদীপ।
জল ছেড়ে যাব টিলায়;
শুষে নেব
পাহাড়ি ফুলের দুঃখঘ্রাণ।
এভাবে রাত্রির যত
নিদ্রিত ঝরোকায়
জেগে উঠি আমি;
প্রত্যহ।
গর্ভসুর
বেজে চলে খোল। জল-করতাল। তারাস্নাত অভিশাপে ভুরভুর
কুসুমের কোষ। হায় মালঞ্চ!
ক্ষুধিত জোয়ারে ভেসে যাই
আমি চিত্রল পাষাণ।
কবরের অনন্ত কাকলিতে
শোষিত মেঘমল্লার।
তালে তালে নৃত্যনিষ্ঠুরে
তুমি ফুটিফুটি; মরণ-শতদল।
কালো গোলাপের তরঙ্গ-ঝাঁপটায়
ক্রমশ তলিয়ে যাই
অপুষ্পক উদ্ভিদের ছায়ায়।
রক্তসোনালি জাগায় চিরসুপ্তির জরায়ু।
ওই খোলাবাজার।
ছেঁউড়িয়ার সাধুসঙ্গেরও
চকমকি বিকিকিনি।
দূর সমুদ্র।
মীননিকেতন
থেকে
মেঘমহলে
এ কেমন নৃত্যবিস্তার!
গহন মুদ্রার ভারে
ভূ গর্ভবতী
আর গানে গানে
দিগন্ত আঁধার।
রাসনিদ্রার মঞ্জরি ছাওয়া
যত পাগল জল, লোনা হাওয়া।
নরখাদকের পরগনা পেরুলে সূর্যাস্তবন।
আমি ধরতে গেলেই তুমি
এতসব দৃশ্যের খাঁচা ভেদ করে
দ্রুত মিলিয়ে যাও
সাতসন্ধ্যার
কমলা
ঝোপঝাড়ে।