সেলিম রেজা নিউটন-এর তিনটি কবিতা

নীল কোকিলের গান
ইস্ক্রা রহমানের জন্য …

অস্তিত্বের খানিক নিচেই জ্বলতেছে লাল আলো–
জ্বালো তোমার আওয়াজ, মানুষ, ফুলকিনিচয় জাগে;
ডাক দিয়ে যায় সত্তা তোমার – যদিও সময় কালো –
অন্ধকারের ঘোর অমাতেও আত্মা-আগুন থাকে।

আগস্টের এই ছয় তারিখে কোনখানে ডিম পাড়ে
আকাশ থেকে মিথ্যাকারের ইস্পাত-ঈগল পাখি;
কে জানে ফের কোন গগণে মার্কিনাগুন-ঝড়ে
নীলচে সবুজ হিরোশিমায় জ্বলছে নাগাসাকি।

ইস্ক্রা, তোমার গানের আগুন – অচেনা সিম্ফনি –
জ্বালবে গানের শিখা কালের হারমোনিকার মতো;
ব্যক্তি-সমাজ-শিখার লালে নাচবে যে হারমোনি
তারই সুরে কাঁপতেছে আজ শুষ্ক পাতার ব্রত –

শীত পেরুনোর স্বপ্নসহা নীল কোকিলের ডাকে।

রচনা: ৬ই আগস্ট ২০১৩।
পরিমার্জনা: ২৩শে নভেম্বর ২০১৩।

 

সত্য অথবা মিথ্যা

সত্য এসে দাঁড়ালো সমুখে।
আমি তার চোখে চোখ স্থির করে তাকাবো কীভাবে?
আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হোলো তাকে দেখে –
এত শান্ত, দৃষ্টিহীন চোখ।
আমি চোখ সরালাম। পালালাম চোখের পলকে।

মিথ্যা এসে দাঁড়ালো শ্রবণে।
এতটা কর্কশ তার গলা – ভাঙা, ফাটাফাটা, গুহ্যপথ-কাটা।
বধির বলদ আমি এতদিন তাকেই ভেবেছি গান। ভগবান,
এই সত্য কান থেকে বাঁচাও আমাকে।
আমি তাকে কোনোদিন শুনতে চাই না এ জীবনে।

রাবি: ১৬ই নভেম্বর ২০১৩

 

আলোকচমকচিত্র
নীলজল, নীলাকাশ, পাখি …

দাঁড়ালো সে সাহেববাজার-মোড়ের নিম এক কোণে।
শান্ত হলো অসুরসভা প্রভার আস্তরণে;
নরোম আলোর আবছা আভা নিজের গুঞ্জরণে
ছড়ালো সুর – জানলো না কেউ গোপন কারণকার্য।

অরুণিমার কক্ষপথের সীমায় সে নিজ-সূর্য –
স্নিগ্ধ আলোর চন্দ্রচরে শব্দহীন এক তূর্য।
উঠল বেজে শেষ বিকেলের অচিন ষড়ৈশ্বর্য –
নেমে এলেন ঈশ্বরী। তাঁর সঙ্গে বোধি-ভান্তে।

গান কোরে সে চাঁদের গলায় অধীন ধ্বনির শব্দ-শলায়
আগুন জ্বালায় অন্ধকারের অতলপুরের অন্তে।
গৌতম সে – সে সিদ্ধার্থ নীল আকাশের প্রান্তে
আঁকল ছবি অনলজলের অবাক বিকিরণে;

হঠাৎ সেদিন সাহেববাজার-মোড়ে – আপন মনে।

রাবি: ২৪শে নভেম্বর ২০১৩

Facebook Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top