মাছরাঙা পাখির সফর

সেলিম রেজা নিউটন

সুস্মিতা চক্রবর্তী: ওগো চক্রযান, তোমার চাকায় মম প্রাণ

 

এক। দূরের থেকে দূরের দিকে

এখনো তুই কোথায় বটে
বেঁচে আছিস দু-এক ফালি-
এখনো তাই কামিনী ফোটে,
গন্ধে ভরে তোমার ডালি।

এখনো চাঁদ নিখোঁজ হলে
হারায়ে তারে মেঘের রঙে
খুঁজতে থাকো বিরহানলে
তৃষ্ণাবারি আকাশগাঙে।

ছায়াপথের আলোকস্নাতা
দূরের থেকে দূরের দিকে
আকাশী নীল অপরাজিতা
আকাশ খোঁজে নির্নিমিখে।

আকাশও তার চন্দ্রচোখে
তাহার দিন তাহার যামী
খোঁজে শ্যামল মেঘলীনাকে-
কোথায় তার পরাণস্বামী?

এখনো ঠিক বিপদ হলে
পদ্য জমে চোখের কোনে;
এখনও তুই দূরের ছলে
বেঁচে আছিস আমার মনে।

 

দুই। ট্রাকের পেছনে

পথে জ্যাম, ফোনে জ্যাম-
কোনো কথা যায় না শ্রবণে।
বরষা-ইঞ্জিনাগত মেঘলাটে ধোঁয়ার কাঁপনে
তোমার চেহারা দেখি
ট্রাকের পেছনে,
হাস্নাহেনার মতো ঝিরিঝিরি শাদা
সুগন্ধীতে স্নাতা
সেই স্মৃতির কাননে।

দেখি শুধু নিতান্ত তোমাকে:
তোমার চুলের মতো অবিন্যস্ত ঝাড়ে
অচেনা পাখির গান,
এলোমেলো সাজানো বাগান।
তারই মধ্যে, কোথায় অলখে
নব-বালিকার চেনা গলা
নিমগ্ন আত্মার মৃদু স্বরে
বুঝে নিতে চায় তার নিখোঁজ পিতার পথচলা-
অজান্তেই শেখে
আপনার জীবনের মানে।

তোমার-আমার
মধ্যবর্তী স্থান-কাল, মধ্যবর্তী স্মৃতির খামার
আমাদের দু-জনার
অন্তর্লীন আলো আর অন্ধকার অনুভবে সাধা
এক পূর্ণাঙ্গ পৃথিবী।
তারই ফালি ফালি ছবি
ট্রাকের পেছনে।

‘ঢাকা মেট্রো তালব্য শ
শূন্য শূন্য সাত পাঁচ নয় ছয়’ দেখতে দেখতে
মনে পড়ে-
রক্ত হিম করে ফেলা কোনো ঠাণ্ডা ঘরে
মুদ্রা-চিহ্ন এঁকে রাখা শীতল এক্সচেঞ্জ।
মনে পড়ে: শাদা চামড়া
বিদেশী এলিমেন্ট
ছিন্নভিন্ন করে ফেলছে সারা দেশ-পুরো পার্লামেন্ট।
আর আমি টাকার ফ্যাসাদে
সই দিচ্ছি শীতল চুক্তিতে।

অতিশয় স্ট্রেঞ্জ-
তারই মধ্যে চিনে নিচ্ছি
ঘোরতর বরষায় কদমের সাথে কসমেটিক্স-প্রবাস;
কীভাবে যুঝতে হবে বুঝে নিচ্ছি
রাষ্ট্র ও সমাজের ক্লাস-‘এমসিজে তিন শত ছয়’।

তারই মধ্যে গন্ধে আনে স্মৃতিমুগ্ধ হাস্নাহেনারা
ঝিরিঝিরি, শ্বেতশুভ্র তোমার চেহারা-
মন থেকে অন্য সব মুছে ফেলতে চায়।

 

তিন। মাছরাঙা পাখির সফর

যে মানুষ আছে দূরে,
ঘর ছেড়ে,
হাস্নাহেনা ছেড়ে;
তার কিছু দুঃখ আছে-
কাছে কাছে থাকতে না পেরে।
তাকে আর প্রশ্ন কেন-
দায় নিয়ে,
কর্তব্য শুনিয়ে?

ভালোবাসা, জেনো,
দুঃখ জানে,
জানে আনন্দকে।
তার কোনো চোখে
দায় নাই;
দায়িত্বেরা নাই।
শুধু নীলরঙা এক মাছরাঙা পাখি
আকাশের নীল ছেনে ছেনে,
তৃতীয় নয়নে
স্থির বসে আছে একা একা
প্রেমের গহনে ডুব দিয়ে।
ঠোঁটে তার অনন্ত পিপাসা-
একান্ত কাছের।
চোখে তার জলছবি
সৃষ্টি, প্রজনন আর নৈকট্য-মাছের।
যদি ভাসে সেই মাছ কাছাকাছি ক্রূরতার জলে!
সেই ছলে
কামনায় জর্জরিত জীবনের তলে
তার এত ডোবাডুবি, ওড়াউড়ি,
মরাবাঁচা নাচ।

যে পাখি আহার খোঁজে
উড়ে উড়ে,
দূর থেকে দূরে-
তার কিছু ক্লান্তি আছে,
সফরের উন্মূলতা আছে।
সে তার পাখিনী রেখে,
পক্ষীছানা রেখে, কিছু খাবারের খোঁজে
নিজেই আহার হয়ে গেছে আকাশের।

যে মানুষ পথে নামে,
মুদ্রা আর মোকাবেলার পথে-
সে তোমারই কাছে কাছে
থেকে গেছে।
তাকে একটু শক্তি দিও,
স্বস্তি দিও,
শুভাশিষ দিও-
আত্মা খুঁড়ে সে তোমাকে ডেকেই চলেছে
মৃদু স্বরে।
ঝপ-করে-নামা জলে
মাছরাঙা পাখির ডানায়
তুমি তাকে শুনতে পাও না?

 

চার। প্রেমের স্নেহ

আমার কাছে
শরীর চেয়েছিলেন কিছু আদর;
বলেছি তাকে:
হবে না, যাও, ভাগো।

আদর যদি
নিজে থেকেই আসেন,
তখন তাকে রাখব দেহে
বিপুল ভালোবেসে;
জিজ্ঞাসিব:
কোথায় তুমি থাকো?

কত সহজ, কত কঠিন
প্রেমের স্নেহ-মা গো!

 

পাঁচ। তৃষ্ণা

সুরে তোমার একটু ভিন্নতা
আনে আমার দুঃস্বপ্ন পাঠ।
আমি তোমার কল্পনার মাঠ-
বুনো না, প্লিজ, অনুমানের ধান।

ও বীজ বুনে শস্য কিবা হবে-
সন্দেহ বা দ্বিধার দুর্গতি;
আসলে ও তো কল্পনারই যতি,
তার চে ভালো সোজা বর্তমান।

মাছ তো যায় কত মাছের কাছে,
কাছে ও দূরে, সাগর-নদী-ঢেউ-
তাই বলে কি মাছের পিছে কেউ
ফেউ লাগায়? পোষে গুপ্তচর?

একই আকাশ, একই ডানার তলে
বেড়ায় পাখি, কোথায়-কাছে-দূরে;
পাখিকে কেউ সন্দেহ কি করে,
চিনেছে বলে পৃথক জলহাওয়া?

প্রকৃতি বেঁধে রেখেছে বাসনাতে;
তা পূরণেই সমূহসুখছায়া।
বুঝলে নিজ কামনানদীকায়া
থাকে না তড়পানোর মাতামাতি।

মানুষ, শুধু মানুষ, চিনি আমি-
বলব কাকে স্বকীয়া-পরকীয়া?
এড়ানো যায় প্রকৃতি মা’র মায়া?
রাষ্ট্র-নীতি এত শক্তি ধরে?

বাঘ যেমন বোঝে আহার্যকে-
পরস্পরে খাদ্যডোরে বাঁধা;
আমি বুঝি আমার তৃষা-ক্ষুধা
বাঁধা আছে আদি কারণ-জলে।

এখন দেহ চল্লিশের পারে-
আত্মা বোঝে অনন্তের গতি;
যাই নি মরে, বেঁচে আছেন রতি,
বাসনা আছে, আছেন দেখে-যাওয়া।

লব্ধ হলে কে-আমি-তুমি-কে-সে
কবর হবে অনাস্বাদী রাতের-
কত জীবন হয়েছে বরবাদ
বৃথা তর্কে, ব্যর্থতার ভারে।

বরং চলো, বপন করি প্রেম,
উপ্ত হবে আনন্দ-অবিনাশা;
তৃষ্ণা হবে মধুর, যেন ঈশা
স্বয়ং চেখে দেখবে সৃষ্টিকে।

 

ছয়। কবিতার ঢাকা

ঢাকা এলে পদ্য লেখা হয়-
এতটা নির্জন এই বিরাট শহর।
কবিতায় নির্জনতা চাই
(নিঃসঙ্গতা নিতান্ত জহর)।

কবিতায় একা হওয়া লাগে-
মানুষ হওয়ার জন্য একাকিত্ব চাই আগেভাগে।
পরিপূর্ণ একা হওয়া ছাড়া
ফানা হতে পারে না মানুষ।

যখন ‘কবিতা’ বলি-
মানুষের প্রতিশব্দ সেটা।
নিঃশেষে বিলীন হলে পরে
মানুষ কবিতা হয় সম্পূর্ণটা।
কবিতা পূর্ণতা চায়-
পূর্ণ স্বাধীনতা।
কবিতা সাহস চায়-
একা হয়ে ওঠার সাহস।

সম্পূর্ণ একাকী হলে
নিঃসঙ্গ থাকে না কেউ আর।
তখন তোমার গালি,
তখন তোমার শুভকথা-
সমস্তই উচ্চারণ শুধু,
প্রণবের প্রলম্বিত সুরের বাহার।

ঢাকা এলে পদ্য কাছে পাই।
সবাই সর্বত্র আছে-
ফাঁকহীন নিরেট সংযোগ, তবু ফাঁকা।
তারই মধ্যে তুমি পুরো একা-
চাইলেও কেউ খুঁজে পাবে না তোমাকে।
শুধু যদি নিজে চাও তুমি,
যদি ঠিকঠাক ডাক পাও অনন্তের
সব এসে দাঁড়াবে নিকটে,
মূর্ত অবয়বে-মানুষের।

 

সাত। যুদ্ধ নয়— নৈরাজ্যই নিয়ম

যতক্ষণ আক্রমণে থাকো,
কোনো কিছু নিষ্কৃতি পায় না;
অনুভূতি, হৃদয়ের হেম, কিংবা প্রীতি-
যা কিছু সরণ-প্রতিসরণের আওতায় পড়ে,
সব কিছু ধ্বংস হয়ে যায়।

নিজের লাশের টুকরা-টাকরা সবকিছু জড়ো করে
কুড়াতে কুড়াতে,
জোড়া দিতে দিতে যত স্মৃতিকণা, গানগুঁড়া, কথার কাঁকর-
ভাবতে থাকি: যুদ্ধের তো এটাই নিয়ম
(রাজার নিয়ম যথা চাকরবাকর)।

ধাক্কা-গুঁতা-খোঁচা-কোপ-ছোবল-খাবল,
সাবলীল হেসে হেসে কামড়ে খাওয়া আত্মার কপাট;
উলঙ্গ আত্মা নিয়ে পলায়নপর দুশমনের পেছনে-
এটাই তো সমরের ঠাট।
তা না হলে লড়াই কীসের,
কীসের জন্য এত শক্তি অপচয়!
সবকিছু পিষ্ট হলে যুযুধান হস্তীদের পায়ের দাপটে
তবে পষ্ট হয়:
সকল সমরে যুদ্ধ নিজেরই বিরুদ্ধে চলে বটে।
নিজেকে খুন না করে কারা কারা, কবে
মেরেছে অন্যকে?

তাই তো তোমাকে
মোকাবেলা করব না, প্রিয় বাজপাখি।
যুদ্ধ করা অনেক হয়েছে।
চোখের বদলে চোখ নিতে নিতে কানা হয়ে গেছে চিদাকাশ।

যে দিন জেহাদে যতি টেনে আমি নিহত হয়েছি,
সে দিনই দেখেছি অমরতা এসে ছুঁয়ে গেছে আমার এ লাশ।
কে আমাকে মারবে বলো আর-
এই যে সালাম দিয়ে দাঁড়িয়েছি স্বাধীন সেলিম।
আমার অস্তিত্ব আজ আমার অধীন।
আমারই জন্য আজ অপেক্ষায় বসে আছে নীল মাছরাঙা-
পুকুর প্রতীক্ষা করে আছে কবে নিজে পাখি হয়ে
খেয়ে যাবে সোনালিমা মাছ।
মাছের সকাশে পাখি ইশকের আগুনে জ্বলেপুড়ে
হয়ে যাবে সম্পর্কের সোনা-
সে দৃশ্য দেখার আশে
মহাকাশে
উল্কা আছে থেমে;
স্তব্ধ হয়ে বসে আছে নিখিলের জলের আঙিনা।

তেপান্তরে তোর ছদ্মবেশে
শূন্যতা অপেক্ষা করে আছে-
কবে আমি হাওয়া হয়ে যাব তার কাছে।
আমার অপেক্ষা নিজে অপেক্ষায় হয়ে আছে নীল-
কবে তুমি তোমার পংক্তিতে
আমাকে করবে অন্ত্যমিল।
তোমার পর্বতে বসে এক মনে ধ্যানে আছি বছর, দশক-
কবে তুমি বলবে, যাও, জিকির অনেক হলো,
এবার বাইরে ঘুরে আসো।

বাইরে ও ঘরে আমি তোমার প্রমাণ হয়ে আছি প্রকটিত-
গাছ না ভরসা দিলে পাখির কি ডানা মেলা হতো?

তুমি ভাবো আমি বুঝি নেতা হতে চাই ভবপারে।
অথচ যশোরে
চে গুয়েভারার আত্মা নিজে এসে অনুতপ্ত স্বরে
বলেছে: ‘লিবার্টি ছাড়া সমাজ-তান্ত্রিক স্রেফ আরো একটা দাস’;
বলেছে: ‘সমতা ছাড়া স্বাধীনতা বিশেষ সুবিধা-
চিরায়ত অভিজাত প্রথা’।

চে-র রূপান্তর, জেনো, আমারই নিজের নবপ্রাণ।
বলশেভিক ঘরে জন্মে, সুতরাং, আমি আজ নৈরাজ্যপ্রধান।

নৈরাজ্যই নিয়ম-
কেন্দ্রীভূত নেতাহীন, কর্তৃত্ববিহীন সংযম।
আমার কর্ম স্রেফ ক্যাটালিস্ট-উস্কানির কাজ।
উস্কে দিলে স্বাধীনতা জ্বলে ওঠে-
জেগে ওঠে ক্ষুধার আওয়াজ।

তাই আজ নিজেকে উস্কাই-
আপনি আচরি ধর্ম সখারে শেখাই।
অন্তরের আবর্জনা উস্কে দিয়ে জ্বালাই আগুন-
আলো হলে চেনা যাবে পথ।
আলো হলে হবে দেখাশোনাÑ
অন্ধকারে, যুদ্ধে, মতাদর্শে রাস্তা হয়ে ওঠে অধিক অচেনা।

অধিক অচেনা থেকে আমাকে ফেরাও এইবার।
বিবাহে, পরিবারেও মতাদর্শ রয়েছে দেদার।
পরিবার রক্তে নয়, আত্মার বন্ধনে অনিবার।
অথচ অভ্যাসটুকু তাকে
সামরিক রাষ্ট্রের বুনিয়াদি সংস্থা করে রাখে।
প্রতিটা বৈশাখে
ঝড়ের বন্দনা করে লোকে তাই চায় পুরানোকে।

তার চেয়ে চলে আয়,
সমরের বাইরে গিয়ে, সহযোগিতার পাদদেশে,
আমরা বিন্যস্ত করি নতুন বসতি হেসে হেসে।
পরিবার বড় হোক বড় প্রেমে,
সম্পর্কের চিরচেনা দেশে-
বারবার দূরে গিয়ে, কাছে ফিরে এসে,
বারবার তোকে ভালোবেসে।

আজ তোর আক্রমণে আমি তাই ভীত নই মোটে-
পথে যে নেমেছে তার কপালে দুর্ভোগ কিছু ঘটে।
এই যুদ্ধ হবে শেষ,
তার আগে ভোগাবে অশেষ।
আমরা সে ভোগান্তির করে যাব অন্তিম অর্চনা
সুরভিত, পুষ্পায়িত, ঝিরিঝিরি প্রেম-মূর্চ্ছনায়।
দেখিস, ফুটবে ঠিক জ্যোৎস্নায়-
আমাদের প্রিয় হাস্নাহেনা।
তারই ছবি আঁকি আজ সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে।

 

আট। প্যারিস, মে ১৯৬৮

একটুখানি দৌড় তোমাকে
এগিয়ে দেবে মঞ্জিলে …
জলদি বন্ধু! পুরান জগৎ
আসছে ধেয়ে কাল গিলে!

 

নয়। চেতনার রঙ

চেতনার সব রঙ উজ্জ্বল তাকিয়ে আছে নিজের সকাশে।
সাড়া পড়ে গেছে পুরো চৈতন্যপাড়ায়-
নয়াতনু এসেছে ফিরিয়া
আবার নিউটনের কাছে।
কে কৃষ্ণ, কে রাধা-বোঝার উপায়
নাই ক্যানভাসে।

ঘাসের প্রান্তর ছেড়ে দলছাড়া হাঁসের মতোন-
অথচ পথকে ভুলে যায় নাই একটুও সে।
আবার এসেছে ফিরে নবধ্যানে
আপনার আশে।

এখানে সুস্মিত আলো বহুরঙা শাদা আর কালোর আবেশে
সব উজ্জ্বলতা নিয়ে চিন্তার মতোন সদা-একা,
বেদনার মতো একা আজ।
যেন কোনো শাহবাজ, একাকী ঈগল,
সব কিছু ভুলে একা লক্ষ্য স্থির করে উড়িতেছে-
সব স্বপ্ন সঙ্গে নিয়ে তার।
যেন এক নির্জন সেতার
নিখিলের ওঙ্কারের ভেতরে বাজছে একা একা-
বাকি সব ফাঁকা।
শব্দের সমস্ত আবরণ
খুলে পড়ছে একটা একটা অক্ষরের মতো।

সব মুদ্রা খসে গেলে
বেজে ওঠে একান্তই অন্তরের ধ্বনি
অবশেষে।
ঘুমে-চোখ-ঢুলু-ঢুলু নির্ঘুম রাত্রির বেশে
নিউটন এসেছে পুনরায়
অস্তিত্বের আপন খোলসে।

এখানেই চোখ খুলে, চোখ বন্ধ করে, বসে থাকো।
এখানেই অন্তরের অন্তিম ইজেলে বসে আঁকো
আত্মার আদ্যন্ত রঙ, আর যত রূপের বিন্যাস।
পাহাড়ে সন্ন্যাস নিয়ে,
জঙ্গলের জঙ্গমতা ক্রন্দনে ভাসিয়ে
যাকে তুমি পেতে-
সে এখানে চিরন্তন সাঁকোকে ডিঙিয়ে
বসে আছে
লীলা আর শিলার অন্তরে।

এই ফাঁকটুকু তুমি চিনে রাখো
মিনাজেল, হে উসিটেরন!
নিরাশ্রয় চরাচরে অবলীলাক্রমে শিলাবৃষ্টি নেমে এলে
এইখানে সব ধ্বনি আর সব রঙ খুলে ফেলে
চুপচাপ, একা বসে থেকো-
সদানন্দ, সদা-সচেতন!

ঢাকা: এপ্রিল-জুন ২০১১

 

Facebook Comments

2 Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top