বিড়ালও কবিতা লেখে
এই কথা মানুষ জানেনা,
জানে বিড়ালের প্রেমিকারা
যখন রাত্তির ঘন হয়ে আসে
ঘুমিয়ে পড়ে ঘরবাড়ি
বিড়াল তার কবিতার খাতা মেলে ধরে
তার কাব্য কান্নার সুর হয়ে
বেজে ওঠে জানালা কার্নিশে
এই ছোট্ট তুলতুলে নরম প্রাণীটির
এতোই দুঃখ,এতোই বেদনা
সে কথা সে জানে, যে
বোঝে বিড়ালের ভাষা
চীনের হায়াং শহরের লোকেরা
বিড়ালের ভাষা শিখে
কাব্য রচনা ছেড়ে দিয়েছিল
সেই লোকটা
সকালের নাস্তা চাও?
কাউকে ডাকার আগে নিজেকে ডাকো
দ্যাখো তুমি আছো কিনা
মুকুল চলে গেলো
মুরাদ চলে গেলো
রহমান চলে—
এভাবে সকলে যায়
কেউ যায় বলে কয়ে, আবার
অনেকে যায় অগোচরে
সুতরাং তুমি আছো কিনা
তা নিজেকে ডেকে আগে জেনে নাও
তারপর অন্যদের ডাকো…
লিফট বেয়ে নেমে আসো মধ্য রাস্তায়
অসংখ্য নগর ক্লান্ত লোক
বাস ট্যাক্সি রিকশা ফেরিঅলা
লোক আর লোক, কাকে চাও?
যাকে চাও তাকে ডাকার আগেই
নিজেকে ডেকো, দ্যাখো
তুমি ঠিক ঠাক আছো কিনা
আগের মতোই পাপি তাপি বান্দা
বাসা অফিস আর রাজপথে
হেঁটে যাওয়া সেই লোকটা
মুখ বই
লোকটা অতি সাধারণ, তাই
কম্পিউটারে তার আসক্তি ছিল না
বেলে মাছ কাচা মরিচ রসুন, হলুদ
জামা জুতো চটি এমনকি ছাতা
এসবই জীবন বলে জানতো সে
চেহারায় তারুণ্যের রেশ
যৌবনের ভাব ফুরোনোর আগেই
একটা ফটো তুললো সেই লোকটা
বন্ধুদের সাহায্যে ফটোটা
কম্পিউটারে ঢুকিয়ে ছিল
ব্যাস, তারপর থেকেই তার বিষ্ঠা
শুকিয়ে যেতে লাগলো
চোখের কোনায় কালো জমলো
মানুষের মুখ নিয়ে প্রবল ভাবনায়
তার জগত একদিকে সঙ্কুচিত
অন্যদিকে প্রসারিত হতে থাকলে
কারণ মানুষের মুখে
মুখের চেয়ে দাঁতই থাকে বিশি
সেই একা লোকটা
তোমরা চলে যাও
বিকেলের প্রবল জ্যাম ছিন্ন করে
টুকটাক বাজার সেরে
বউ বাচ্চার তেল কড়াইয়ের
ঘন সংসারে যাও চলে যাও
তিনি আজ ফিরছেন না
নাগরিক প্রাচীন গাছের সাথে
তার কিছু কথা আছে
পথে পথে হাওয়া বাঁকা হয়ে আছে
বাতাসগুলোকে সোজা করে
মৃত নদীর বুকে কিছুক্ষণ বসে
পোকা মাকড়ের সাথে গল্প করে
তাকে ফিরতে হবে
সুতরাং আজ রাতে তার আর
ফেরা হচ্ছে না
প্রিয় বন্ধুরা ফিরে যাও
তেল ফুটানো ভাজা মাছ আর
দক্ষিণা বাতাসের মধুর বাড়িতে
শুধু তাকে, সেই একা লোকটাকে
ফেলে যাও সড়ক চাতালে
ও গাছের সাথে গাছ হয়ে
ল্যাম্প পোস্টের সাথে ল্যাম্প পোস্ট হয়ে
দাঁড়িয়ে থাকুক
মানুষের সাথে
মানুষের সাথে মানুষ মেলে না
হরিণ শিম্পাঞ্জি এমনকি পেঁচাও মেলে
কলেজ পাড়ায় দেখা হলো মৌমিতার সাথে
চপল চঞ্চল ওই কিশোরীর দেহে
হরিণের ছাপ স্পষ্ট
অর্থনীতির শিক্ষক আবদুল বাসিত
একেবারে শিম্পাঞ্জির মতো
এমনকি শৌমিকের মাসিমা জয়া
চেহারায় স্বভাবে একেবারে পেঁচা
মানুষের সাথে মানুষ মেলে না
বাঘ ভল্লুক শেয়াল অন্যসব প্রাণী মেলে
অথচ রুশ বিজ্ঞানীরা দেখেছেন
পৃথিবীর সব মানুষকে ১০০ চেহারা কাঠামোর
মধ্যে বেঁধে ফেলা যায়
চেহারা হয়তো মেলে কিন্তু স্বভাব মেলে না
ডিএনএ মেলে না
দেখাও একটা ব্যাপার
মানুষ দেখতে হয় খুব কাছ থেকে
দেয়াল
সমস্ত সম্পর্কের মাঝে দেয়াল থাকে
ছোট, বড়, মাঝারি, ভাঙা, শক্ত
এরকম নানা রকম দেয়াল, এমন কি
তারা যখন প্রচণ্ড জড়িয়ে ধরে পরস্পরকে
একজন অন্য জনের আরও গভীরে ঢুকে যায়
তখনো দেয়াল থাকে, যে অদৃশ্য দেয়াল
কনডমের মতো, বাঁকবে— কিন্তু ভাঙবে না
সুতো
জল ঝর্ণা স্রোত এগুলো সব একই সুতোয় বাঁধা
সুতো ছিড়ে গেলে পানি মাটির আরো তলে চলে যায়
সম্পর্ক বিরহ প্রেম সন্তান কাম
এগুলোও একই সুতোয় বাঁধা
সুতো ছিঁড়ে গেলে মানুষ মাটির
আরো নিচে আরো অন্ধকারে নেমে যায়
সুতো-২
বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের মধ্যে
একটা সুতো থাকে
সুতোটা দোলো, সুতোটা দোলে
দুলতেই থাকে
সুতো ছিড়ে গেলে
সুন্দরী খানকি আর সুন্দর
কুত্তার বাচ্চা হয়ে যায়