দ্য অ্যাপল কার্ট (পর্ব-৫)

untitledqপর্ব-১।। পর্ব-২।।  পর্ব-৩।। পর্ব-৪।। 

জর্জ বার্নার্ড শ

অনুবাদ : কামাল রাহমান

প্রো: তার শেষ চাতুরি। কিছু মনে করবেন না: যথেষ্ট নিরাপদই ছিলেন তিনি। দুপুরের খাওয়ার কি হবে? না খেয়ে আছি আমি। তুমি কি আমার সঙ্গে খেতে যাবে লিজি? লী: কথা বলবেন না আমার সঙ্গে। [উন্মত্তের মত বেরিয়ে যাবে।] এমান্ডা: আহারে লিজি, ডার্লিং! রাজনীতির ক্ষেত্রে কখনোই মত পাল্টালে না! যদি ওর মেধা ও শিক্ষা থাকত! অথবা যদি আমার মত চতুর্মুখী প্রতিভা থাকত ওর! কি একটা রানিই না হতে পারত! ঠিক পুরোনো রানি এলিজাবেথ, আহ্! দুঃখ পেও না, জো: এত করে যখন বলছ তুমি, আমিই খাব তোমার সঙ্গে। ক্র্যা: আমার সঙ্গে খাবেন, আসুন আপনারা সবাই। এমা: কী প্রাচুর্য রে বাবা! পোষাতে পারবেন এটা আপনি? ক্র্যা: ব্রেকেজেস দেবে। ‘রিজ’-এ একটা স্থায়ী হিসাব আছে ওদের। বছরে পাঁচ লাখের উপরে আসে। প্রো: ঠিক। চলুন, মিসরীয়দের উপর দিয়ে চালিয়ে দেই। বোনা: [রোমান সম্ভ্রমের সঙ্গে] দুপুরের খাবার জন্য আমার খরচ একশ ছয় টাকা। আমিই ব্যয় করব এটা [সদর্পে বেরিয়ে যাবে] এমা: [পিছু ডেকে] একটা পশুতে পরিণত করবেন না নিজেকে, বিল। টা টা! প্রো: আসুন, আসুন: এমনিতেই দেরি হয়ে গেছে। (পাশাপাশি বেরিয়ে যাবে। স্যাম ও প্যাম ভেতরে ঢুকতে থাকবে, ওদের ডেস্কে ফিরে আসার জন্য পাশে দাঁড়িয়ে থাকবে যাতে বেরিয়ে যেতে পারে ওরা। জো, এমান্ডা যার বাহুবন্ধনে থাকবে, তাদেরকে দরজায় দেখে দাঁড়াবে) প্রো: আপানারা দু’জন এসব শুনছিলেন নাকি, জিজ্ঞেস করতে পারি? প্যাম: দেখুন, এটা বরং অসুবিধেজনক হবে, তাই হবে না? যদি সব কিছু বলে দিতে হয় আমাদের? সেম: ‘‘একেবারে চিরদিনের জন্য’’ মি. প্রোটিয়াস, রাজার ব্যক্তিগত সচীবদের অবশ্যই সব কিছু শুনতে হয়, সব কিছু দেখতে হয়, এবং সব কিছু জানতে হয়। প্রো: ‘‘এককভাবে অনেক’’, মি. সেম, আমার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। [চলে যাবেন তিনি।] এমা: [তার সঙ্গে যাবে] বিদায়, সেমি। ভালো থেকো পেম। সেম ও প্যাম: [ওদের লেখার টেবিলে বসতে থাকবে ও বিস্ময়করভাবে এক সঙ্গে হাই তুলতে থাকবে] অউ- অউ- অউ- অউ- অউ- অউ- অউ- অউ- অউ- অউ- অউ- অউ- অউ-ফফফ!!!

বিরতি

(ঐদিন বিকেল সাড়ে তিনটায় সাজ-ঘরের লেখার টেবিলে বসে হিজিবিজি লেখায় ব্যস্ত থাকবে সুন্দরী অরিন্থিয়া। রোম্যান্টিক চেহারা ও পরনে চমৎকার পোশাক। ঘরের এক কোণায় দেয়ালের কাছে থাকবে টেবিল, বিপরীত কোণায় দরোজা। ঘরের মাঝখানে বড় একটা সোফা, অরিন্থিয়ার পেছন দিকটা দেখা যাবে শুধু। দরোজা পেরিয়ে অপেক্ষা করবেন রাজা) অরিন্থিয়া: [মাথা সামান্য ঘুরিয়ে] কে ওখানে? ম্যাগ: রাজা স্বয়ং। অরি: দেখা করতে চাই না আমি তাঁর সঙ্গে। ম্যাগ: কতক্ষণ পর ফ্রী হবে তুমি, অরিন্থিয়া? অরি: আমি কি বলি নি যে ফ্রী নই এখন? রাজাকে বলুন, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাই না আমি। ম্যাগ: তোমার অনুগ্রহের জন্য অপেক্ষা করে আছেন তিনি। [ভেতরে ঢুকবেন ও সোফাটিতে বসবেন।] অরি: চলে যান [একটু থেমে] আপনার সঙ্গে কথা বলব না আমি [আরেকবার থেমে] আমার ব্যক্তিগত কক্ষগুলোয় যদি যে-কোনো মুহূর্তে ঢোকার অধিকার থাকে, শুধু এ কারণে যে এগুলো রাজপ্রাসাদের ভেতর, এবং রাজা একজন ভদ্রলোক ন’ন, তাহলে অবশ্যই প্রাসাদের বাইরে একটা ঘর নিতে হবে আমাকে। ওরকম একটা অফিসে চিঠি লিখছি আমি। ম্যাগ: আমাদের আজকের ঝগড়াটা কি নিয়ে, সোনা? অরি: আপনার বিবেককে জিজ্ঞেস করুন। ম্যাগ: তুমি উদ্বিগ্ন হলে আমার কেউ নেই আর, বল তো সোনা, অবশ্যই বলতে হবে আমাকে। (টেবিল থেকে একটা বই তুলে নেবে ও উঠে দাঁড়াবে; তারপর হঠাৎ ঝড়ের গতিতে সামনে এগিয়ে এসে সোফায় বসা রাজার হাতে বইটা ছুঁড়ে দেবে।) অরি: ওখানে। ম্যাগ: এটা কি? অরি: ষোল পাতায়, দেখুন ওটা কি– ম্যাগ: [বইয়ের পেছন দিকে এটার নাম দেখতে থাকবে] ‘‘আমাদের দাদার দাদার দাদাদাদীর গান’’ কত পৃষ্ঠা যেন বললে? অরি: [দাঁত বের করবে, দাঁতের ফাঁক দিয়ে বলবে] ষোÑ লÑ ম্যাগ: [বইটা খুলে পৃষ্ঠাটা বের করবে, ওর চোখ দুটো স্বীকৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে] আহ্, প্রেমের পূজারী! অরি: শব্দ তিনটা পড়–ন, যদি সাহস থাকে। ম্যাগ: [সোহাগপূর্ণ মিটিমিটি হাসির সঙ্গে] ‘‘অরিন্থিয়া, আমার প্রিয়তম’’ অরি: এমন একটা ভান করেছিলেন যে এই নামটা কেবল আমার জন্যই সৃষ্টি করেছিলেন আপনিÑ আপনার সৃষ্ট পৃথিবীর একমাত্র মহিলার জন্য। ছিঃ, পুরানো বইয়ের দোকানের পচা ঝুড়ির একটা বই, ছিঃ ছিঃ, আর আমি কিনা ভেবেছিলাম যে একজন কবি আমি! ম্যাগ: দেখ, একজন কবি আরেকজন কবির জন্য নাম উৎসর্গ করতেই পারে। অরিন্থিয়াÑ আহ্! এ নামটাই আমার জন্য পরিপূর্ণ যাদু! শুধু এই নয় যে এটা আবিষ্কার করেছিলাম আমি। যখন বালক ছিলাম একটা পুরোনোদিনের গানের অনুষ্ঠানে এ নামটা শুনেছিলাম। তখন থেকেই আমার মাথায় গেঁথে রয়েছে এটা। তোমার জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছিলাম এটা। অরি: দোষ ঝেড়ে ফেলার যুৎসই একটা কারণ সব সময়ই থাকেতোমার। প্রতারক ও মিথ্যেবাদীদের রাজা তুমি। কখনোই বুঝবে না তুমি একটা অসত্য ব্যপার কেমন করে আহত করে আমাকে। ম্যাগ: [অনুশোচনা প্রকাশ করে, হাত দুটো আলিঙ্গনের জন্য প্রসারিত করে] সত্যিই দুঃখিত আমি, সোনা। অরি: হাত দুটো পকেটে রাখুন আপনার: আর কখনোই ওগুলো স্পর্শ করতে পারবে না আমাকে। ম্যাগ: [মেনে নিয়ে] আহত হওয়ার আগেই ও রকম ভান করো না, লক্ষিটি, আমার হৃদয়কে পীড়া দেয় এটা। অরি: একটা হৃদয় আবার কখন বুকে বসিয়েছেন আপনি? ওটাও কি পুরানো মালের বাজার থেকে কিনেছেন? ম্যাগ: আমার ভেতরে এমন একটা কিছু আছে যা আনচান করে তুমি আহত হলেÑ অথবা তার ভান করলে। অরি: [অবজ্ঞাভরে] হ্যাঁ: আমার শুধু চিঁ চিঁ করে ডেকে যেতে হবে, আর আপনি সোহাগ করে বেড়ালছানার মত কোলে তুলে নেবেন। [সোফায় বসবে, কিন্তু হাতের নাগালের বাইরে] এটা হচ্ছে ঐ জিনিস যা আপনি দেন যখন আমার হৃদয় ভালোবাসা কামনা করে। আমাকে বরং আপনার লাথি ছোঁড়াই ভালো ছিল। ম্যাগ: মাঝে মাঝে সত্যিই লাথি ছুঁড়তে ইচ্ছে হয়, বিশেষ করে যখন তুমি উত্যক্ত কর। কিন্তু ঠিক ঠিক এটা করা উচিত না, তোমাকে আহত করার ভয়ে সব সময় ভীত থাকা উচিত আমার। অরি: আমার বিশ্বাস একটা চুল পর্যন্ত না সরিয়ে আমার মৃত্যু পরোয়ানা স্বাক্ষর করতে পারেন আপনি। ম্যাগ: একভাবে এটা সত্যি। আশ্চর্যের ব্যাপার, তোমার মন এতটা অন্তদর্শী, এত গভীরে এটা যায় কেমন করে! অরি: আমি মনে করি, আপনার অন্তর্দৃষ্টি যত গভীরে যায়, ততটা আমার যায় না। ম্যাগ: কি জানি। অর্ধেক পথ আমাদের মন এক সঙ্গে যায়, তারপর তোমার মন হয় ওখানেই থেমে যায়, নয়তো অন্য পথে চলে যায়, তখন ঐ উঁচু পথ ধরে চলে যাও তুমি আর আমি নিচুটা ধরে। ঠিক বলতে পারি না, কিন্তু যেভাবেই হোক একটা নির্দিষ্ট বিন্দুর পর একে অপরকে হারিয়ে ফেলি আমরা। অরি: তখন আপনার এমান্ডা ও লীসিসত্রাতাদের কাছে ফিরে যান আপনি: ঈশ্বরের অপূর্ব সৃষ্টি, যাদের রোম্যান্স সম্পর্কে ধারণা হচ্ছে এক একজন প্রেমময়ী মন্ত্রীর, যাদের একটা করে দপ্তরও আছে এবং তাদের ডেস্কের বইগুলো হচ্ছে পর্ণোগ্রাফির। ম্যাগ: ওরা সব সময়ই কোনো মানুষ বা অন্য কারো প্রসঙ্গে ভাবছে না। ওটা বরং ওদের আগ্রহের ইচ্ছাকৃত বি¯তৃতি, আমার ধারণা। যদি লীর একজন প্রেমিক থাকে তাহলে নিদেনপক্ষে ঐ লোকটার প্রতি আমার আগ্রহ দেখানো উচিত হবে না; এবং লী যদি অন্য আর কিছু সম্পর্কে কথা না বলে তা হলে তো আমার চিত্তবিকার ঘটবে। ওর দপ্তর সম্পর্কে যথেষ্ট আগ্রহী আমি। ওটার প্রতি ওর অনুরাগ আমাদের মধ্যে অসীম আগ্রহের সৃষ্টি করে। অরি: ঠিক আছে, ওর কাছেই যান: আপনাকে বাধা দিচ্ছি না আমি! কিন্তু ওকে বলবেন না যে মানুষ সম্পর্কে কিছু বলা ছাড়া আর কোনো প্রসঙ্গই নেই আমার: একটা মিথ্যা বলা হবে ওটা; আপনিও জানেন। ম্যাগ: এটা তাই, তুমি যে রকম বললে, মিথ্যা কথাই; এবং আমি জানি। কিন্তু এটা বলি নি আমি। অরি: এটার ইঙ্গিত করেছেন। এটাই বোঝাতে চেয়েছেন। পরিহাসযোগ্য এসব রাজনৈতিক মহিলারা যখন আপনাদের সঙ্গে থাকে, সব সময়ই ওদের সঙ্গে কথা বলেন আপনি, আমার প্রতি একটা শব্দও উচ্চারণ করেন না। ম্যাগ: তখন তুমিও আমার প্রতি না। জনগণের সামনে একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে পারি না আমরা: অন্য লোকদের সামনে বলা যেতে পারে এমন কোনো কথা নেই আমাদের। যখন একান্তে থাকি, বলার মত অনেক কথাই খুঁজে পাই আমরা। এটা কি বদলাতে পার তুমি, সম্ভব হলে? অরি: ঠিক একটা বাইন মাছে মত পিচ্ছিল আপনি; কিন্তু আমার আঙ্গুলের মধ্য দিয়ে পিছলে যেতে পারবেন না। … সব সময়ই কেন আপনি বিরক্তিকর ও কুরূপা, বিশ্রী পোশাক পরিহিতা, অতি-ব্যস্ত রাজনীতিবিদ মহিলাদের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকেন, যারা এমনকি ভালো করে কথাও বলতে জানে না: কেবল ওদের অথর্ব দপ্তর নিয়েই বিতর্ক করতে পারে ওরা, এবং তুচ্ছ যত সব কাজকর্ম, আর নির্বাচনে ওদের সম্ভাবনা নিয়ে বকবক করতে পারে। [অধৈর্যভাবে উঠে দাাঁড়বে] এরকম লোকদের সঙ্গে কে কথা বলতে পারে? যদি এটা স্বামী ও স্ত্রীদের অপ্রোয়জনীয় বস্তু সম্পর্কিত না হয়, তাহলে এটাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় ওরা, মোটের উপর, এ সম্পর্কে কথা বলার কোনো লোকই থাকার কথা না। এবং এমনকি বলার মত কোনো কথা না পেয়ে চাকর-বাকর অথবা বাচ্চাদের নিয়ে কথা বলতে পারে ওরা। [অকস্মাৎ তার চেয়ারে ফিরে যাবে] শুনুন, ম্যাগনাস। কেন একজন প্রকৃত রাজা হতে পারেন না আপনি? ম্যাগ: কি ভাবে হওয়া যায় বলত সোনা। অরি: এই সব দুষ্ট মানুষগুলো থেকে দূরে থাকুন। ওদের বলুন আপনাকে বিরক্ত না করে দপ্তরে পরে থেকে মজুরগিরি করুক ওরা, যেমন এই প্রাসাদে আপনার ভৃত্যদেরকে নিয়োজিত রেখেছেন আপনি ঘর ঝাড়া বা আসবাবপত্র মোছার কাজে। একটা প্রকৃত ও মহৎ, এবং সুন্দর জীবন যাপন করুনÑ একটা রাজকীয় জীবনÑ আমার সঙ্গে। আপনাকে প্রকৃত রাজা বানানোর জন্য যা প্রয়োজন তা হচ্ছে, একজন প্রকৃত রানির। ম্যাগ: আমি একজন পেয়েছি তো। অরি: আহ্, আপনি অন্ধ। আপনি অন্ধের চেয়েও খারাপ: আপনার রুচি নিু স্তরের। ঈশ্বর আপনার জন্য সৃষ্টি করেছে একটা গোলাপ, আর আপনি মজে আছেন একটা বাধাকপি নিয়ে। ম্যাগ: [হেসে] অত্যন্ত উপযুক্ত উপমা, প্রিয়তমে। কিন্তু কোন বুদ্ধিমান লোকটা, যদি তুমি তাকে গোলাপ ছাড়া এবং বাধাকপি ছাড়া কাজ চালানোর মধ্যে কোনো একটাকে বেছে নিতে দাও, তাহলে সে বরং বাধাকপিটাই নিশ্চিত করবে না? অধিকন্তু, এ সকল বিবাহিত বাধাকপিরা এককালে যখন গোলাপই ছিল; এবং, তোমার মত কম বয়সীরা যদিও এটা মনে কর না, কিন্তু তাদের স্বামীরা করে। পরিবর্তনটা ওরা বলে দেয় না। উপরন্তু, যে কারো চাইতেই তোমার বেশি জানা উচিত যে যখন একজন লোক তার স্ত্রীর সঙ্গে হাঁপিয়ে ওঠে এবং তাকে ছেড়ে যায়, এটা কখনোই এ কারণে নয় যে ঐ স্ত্রী তার রূপ হারিয়ে ফেলেছে। নতুন প্রেমিকাটি প্রায়শ পুরোনোটির চেয়ে দেখতে খারাপ ও বয়স্ক হয়। অরি: অন্য কারো চেয়ে এটা বেশি জানতে হবে কেন আমাকে? ম্যাগ: কেন? কারণ তোমাকে দু’বার বিয়ে করা হয়েছে; এবং তোমার উভয় স্বামীই দৌড়ে পালিয়েছে তোমার কাছ থেকে, তোমার চেয়ে বেশি সরল এবং বেশি দুষ্ট মহিলাদের কাছে। আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য তোমার বর্তমান স্বামীর কাছে আবেদন রেখেছিলাম আমি যখন, সে বলেছিল, তোমার সঙ্গে কোনো মানুষই তার আত্মাকে একই ঘরে ডেকে আনতে পারে না। ঐ মানুষটাই যখন তোমাকে বিয়ে করেছিল, তোমার সৌন্দর্যে সোচ্চার ও মোহিত ছিল, তোমাকে বিয়ে করার জন্য তোমার প্রথম স্বামী প্রকৃতপক্ষে একজন ভালো স্ত্রীকে বাধ্য করেছিল ওকে ডিভোর্স দিতে। দু’বছর পেরোনোর আগেই আবার প্রথম স্ত্রীর বাহুবন্ধনে ফিরে গেছিল সে। দুর্ভাগা ঐ মানুষটা ওর বাহুবন্ধনেই জীবন ছেড়ে যায়। অরি: আমি কি বলব ঐ লোক দুটো কেন আমার সঙ্গে বাস করতে পারে নি? এটার কারণ ছিল এই যে, আমি হলাম একজন উচ্চবংশজাত মহিলা, আর ওরা শ্রম-প্রদায়ী কর্মজীবি গোষ্ঠির মানুষ। আমার বিপক্ষে কিছুই ছিল না ওদের: ওদের কাছে রীতিমত বিস্বস্ত ছিলাম আমি। সুন্দরভাবে ওদের ঘর-দোর গুছিয়ে রাখতাম: জীবনে কখনো যা না খেয়েছে তার চেয়ে অনেক ভালো খাওয়াতাম। কিন্তু কারণটা হচ্ছে এই, যে আমি ওদের দু’জনের চেয়ে উচ্চমানের ছিলাম, এবং মহৎ। আমার মত করে বাচাঁর প্রচেষ্টায় সমর্থ হতে পারে নি ওরা। অতএব ওদের পথে যেতে দিলাম ওদের। হতভাগা লোক দুটো ফিরে গেল ওদের বাধাকপিতে। ঐ পুরোনো জং-ধরা সৃষ্টিটা দেখুন, যার সঙ্গে এখন ইগনেতিয়াস বাস করে। ইগনেতির সঠিক অবস্থাটা আপনাকে বোঝাতে পারে সে। ম্যাগ: একজন চমৎকার মহিলা। ওকে নিয়ে খুব সুখী ইগনেতিয়াস। এত সুন্দরভাবে একজন মানুষকে বদলে যেতে দেখি নি আমি। অরি: ঠিক যেমনটার জন্য সে উপযুক্ত। তুচ্ছ। বুর্জোয়া। রাজপথের বাজারগুলোর মধ্য দিয়ে ঘোড়ার মত কদমে লাফিয়ে চলে সে। [উঠে যাবে] স্বর্গের সমতলে পদার্পন করি আমি। যেখানে অবস্থান করি আমি সেখানে সাধারণ মহিলারা আসতে পারে না, এবং সাধারণ মানুষেরাও তাদেরকে খুঁজে পায় আমার সীমানার বাইরে, আর পালিয়ে যায় ওখানে থেকে। ম্যাগ: সপক্ষে যুক্তি দেখানোর জন্য কোনো কিছু না করে ভেতরে দেবীর চেতনা ধারণ করার বিষয়টা অবশ্যই জমকালো। অরি: একজন দেবীর করণীয় কাজ দিন আমাকে; অবশ্যই করে দেখাব। এমনকি একজন রানির কাজের প্রতি ঝুঁকে যেতে পারি যদি আপনি সিংহাসন ভাগাভাগি করে নেন আমার সঙ্গে। কিন্তু এমন দাবি করবেন না যে লোকেরা মহৎ কাজ করে মহৎ হয়ে যায়। তারা মহৎ কাজ করে নিজেরা মহৎ বলে, বড় ধরনের বিষয়গুলো যখন এগিয়ে আসে, এবং ওরা ঠিক একই রকম মহৎ যখন বড় বিষয়গুলো এগিয়ে আসে না। আমি যদি কখনো কিছু না-ই করে থাকি, তবু এই কক্ষটাতে বসেছি, মুখে পাউডার মেখেছি, এবং আপনাকে বলেছি যে কত চতুর একজন মানুষ আপনি। লক্ষ লক্ষ সাধারণ মহিলা, গৃহস্থালী কর্ম নিয়ে ব্যস্ত যারা, নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছে যারা, বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান চালায়, এবং এ রকম অমার্জিত কাজগুলো চালিয়ে যায়, তাদের চেয়ে এখনো অনেক উর্ধে আমি, স্বর্গীয় অবস্থানে আছি। বিরক্তিকর ও একঘেয়ে যে সকল সরকারী কাজগুলো করেন আপনি, ওগুলো কি আরো ভালো কোনো ব্যক্তিতে পরিণত করছে আপনাকে? আপনার দাম্ভিক রাজনৈতিক উদ্যোগগুলো নেয়ার আগেও দেখেছি আপনাকে, পরেও দেখেছি; সেই একই মানুষ।  আর ঐ কাজগুলো যদি না-ও করতেন তবুও একই রকম থেকে যেতেন আমার কাছে, এবং আপনার কাছেও। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে সচেতনতা অন্তত আছে আমার, কোনো কিছু করার অমার্জিত বৃথা অহঙ্কারের চেয়ে যা মহত্তর। এই হচ্ছি আমি, যা করি তা নই, অবশ্যই আমাকে সম্ভ্রম দেখানো উচিত আপনার। যদি কাজ চান আপনি, তাহলে কাজের লোক অথবা স্ত্রীলোকদের কাছেই যান, যাদের কাজের লোক বলেই ডাকেন আপনি, যান্ত্রিক কাজগুলো করার ভান করার চক্রান্তে সারাক্ষণ ব্যস্ত যারা, ওদের অর্থহীন জীবনকে গোঁয়ারগোবিন্দের মত যেভাবে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে, অথবা জীবনের তিরিশ বছর ভোর চারটায় ঘুম থেকে উঠে ষোল ঘণ্টার গাধার শ্রমে নিয়োজিত থাকে, প্রবাল কীটের মত, নিজেদের বড় করে তোলে। ওরা কেন আছে? এই সব নির্বোধ দাসেরা? আমার চলার পথ ঝাড়– দিয়ে পরিষ্কার রাখার জন্য! নক্ষত্রের মত সৌন্দর্য প্রদান করে ওদের উপর রাজত্ব করতে সমর্থ থাকার জন্য আমাকে কিছুই করতে হয় না। কেবল ওদের দাসত্বের জন্য শান্ত্বনা দেয়া, এটাকে হতবুদ্ধি করা, এবং আমাকে পূজা করার স্বপ্নে তাদেরকে ভুলিয়ে রাখার কাজটুকু করে যেতে হয়। আমি কি তাহলে এটার যোগ্য নই? [সে বসবে, রাজাকে বিমোহিত করে] আমার চোখের দিকে তাকান এবং সত্য কথাটা বলুন। আমি এটার যোগ্য, অথবা না? ম্যাগ: যে সৌন্দর্যের পূজারি আমি, তার কাছে এটাÑ হ্যাঁ। কিন্তু ব্যালবাস তোমার অবসরভাতা সম্পর্কে যে বক্তৃতা দিয়েছে তা শোনা উচিত তোমার। অরি: আর আমার ধারণাগুলো: ভুলে যাবেন না ওগুলো, আমার বন্ধকী সব দায়, আসবাব বিক্রির বিল, লগ্নীকারীদের কাছ থেকে যে হাজার হাজার পাউন্ড নিয়েছি আমাকে বিক্রি করে দেয়া থেকে রক্ষা করার জন্য, বন্ধুদের কাছে যেহেতু হাত পাতব না আমি, দয়া করে মনে রাখবেন এসব। আপনিও না হয় আর একটা বক্তৃতা দিন এগুলো নিয়ে, কিন্তু ওরকম ছল করতে সাহস করবেন না যে জনগণ আমাকে অবসর ভাতা থেকে বঞ্চিত করবে। ওরা এটাতে, অমিতাচার বলেন যা আপনি, গর্ব বোধ করে। ম্যাগ: [খুব শীতলভাবে] কথা প্রসঙ্গে বলি, অরিন্থিয়া, যখন তোমার পোশাক নির্মাতারা ঐ শেষ বিলটা তোমার জন্য তুলে রাখে, তখন ওরা কোনো একদিন তোমার রানি হওয়ার সম্ভাবনাগুলোকে মনে মনে হিসেব করে, নাকি তা করে না? অরি: ঠিক আছে, যদি তাই করে, তাহলেÑ কি? ম্যাগ: কারো কাছ থেকে ইঙ্গিত না পেয়ে কখনো ওরকম ঝুঁকি নেবে ওরা। তুমি কি দাও ওটা? অরি: ওটার যোগ্য মনে করেন আমাকে! একটা খুব নিচু দিক আছে আপনার, ম্যাগনাস। ম্যাগ: নিঃসন্দেহে: অন্যান্য ক্ষয়িষ্ণু বস্তুর মত একটা ভুল দিক আছে আমার এবং আরেকটা সঠিক। কিন্তু প্রিয়তমে, তোমাকে হাওয়ায় ছড়িয়ে দেয়ায় কোনো লাভ নেই। যে কোনো কিছুর জন্য সক্ষম তুমি। এটা কি অস্বীকার করতে পার যে টাকার বদলে অন্য কিছু দেয়ার জন্য তোমার কাছে কোনো পরামর্শ ছিল না? অরি: এটা অস্বীকার করার জন্য আমাকে চ্যালেঞ্জ করতে আপনার সাহস হল কেমন করে? আমি কখনোই অস্বীকার করি না। অবশ্যই ওরকম একটা পরামর্শ ছিল। ম্যাগ: এ রকমই ভেবেছিলাম আমি। অরি: ওহ্, জঘন্য! জঘন্য! একটা মুদির দোকানে যান, মুদিখানায়: ওরকম একটা জায়গার জন্যই আপনি উপযুক্ত। আপনি কি মনে করেন যে পরামর্শগুলো আমার কাছ থেকে এসেছিল? বোকার বুদ্ধু, শুনুন, বাতাসে এটা এল কেমন করে: যখন আমার পোশাকনির্মাতা এটার প্রতি ইঙ্গিত দেয় তখন ওকে বলি যে, যদি আর কখনো এ রকম করার সাহস দেখায় তাহলে ভবিষ্যতে আর একটাও অর্ডার সে পাবে না আমার কাছ থেকে। আকাশে সূর্য যেমন দৃশ্যমান, তেমন পরিষ্কার একটা বিষয় থেকে সাধারণ মানুষকে কি করে দূরে সরিয়ে রাখতে পারি আমি? [আবার উঠে পরে] সবাই জানে যে আমিই হচ্ছি প্রকৃত রানি। রাস্তায় হর্ষধ্বনি দেয় ওরা আমাকে। যখন কোনো শিল্প প্রদর্শনী উদ্বোধন করি আমি অথবা নতুন কোনো জাহাজ জলে প্রথম নামানোর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হই তখন দলে দলে ওখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ে ওরা, প্রকৃতির রানিদের একজন আমি; এবং এটা জানে ওরা। যদি না জানেন এটা, তাহলে প্রকৃতির রাজাদের একজন ন’ন আপনি। ম্যাগ: মহান! প্রকৃত প্রেরণা ছাড়া কোনো কিছুই একজন মহিলাকে এমন চাপার জোর দিতে পারে না। অরি: ঠিক: প্রেরণা, কিন্তু চাপা না। [আগের মত বসে] ম্যাগনাস, কখন আপনি আমার সিদ্ধস্থানে যাচ্ছেন? এবং আপনারও? ম্যাগ: কিন্তু আমার স্ত্রী? রানি, আমার হতভাগা জেমিনার হবেটা কি? অরি: ওহ্, চুলোয় যাক সে: গুল্লি করেন ওকে: আপনার সোফারকে বলুন সরিসৃপের ঘর পর্যন্ত চালিয়ে নিতে ওকে, এবং ওখানেই ছেড়ে আসতে। এই মহিলাই একটা চিড়িয়া বানিয়ে ছেড়েছে আপনাকে। ম্যাগ: আমি মনে করি না যে আমার ভালো লাগবে এটা। এবং জনসাধারণ এটাকে দুষ্ট স্বভাবের কাজ মনে করবে। অরি: ওহ্, আমি কি বোঝাতে চেয়েছি তা বোঝেন আপনি। জিজ্ঞেস করুন ওকে, আপনাকে ডিভোর্স করান। খুবই সোজা এটা, যেভাবে রনি বিয়ে করেছিল আমাকে। সবাই এটা করে, যখন একটা পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়। ম্যাগ: কল্পনাও করতে পারি না যে জেমিনাকে ছাড়া কি করব আমি। অরি: অন্য কেউও কল্পনা করতে পারে না যে ওকে দিয়েই বা কি করবেন আপনি। ওকে ছেড়ে কিছুই করতে হবে না আপনাকে। আমাদের বিয়ের পরও যত খুশি ওকে দেখতে পারেন আপনি। সবই পেতে পারেন, যা-কিছু পেয়েছেন, একেবারে ইচ্ছে মত। ঈর্ষাপরায়ণ হব না আমি এবং ওরকম কোনো দৃশ্যেরও অবতারণা করব না। ম্যাগ: তোমার মহানুভবতা এটা। কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে, সমস্যাটার সমাধান দিতে পারবে না এটা। তোমার সঙ্গে যদি বিয়ের বাঁধনে আটকে পড়ি আমি তাহলে জেমিনার সঙ্গে আমার বর্তমান অন্তরঙ্গতা বজায় রাখা ঠিক মনে করবে না সে। অরি: কি মহিলারে! এখন যে অবস্থানে আছি আমি তার চেয়ে খারাপ কোনো অবস্থায় পড়ে যাবে কি সে? ম্যাগ: না। অরি: তার মানে, এমন একটা অবস্থানে আমাকে রাখতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন না আপনি, যে অবস্থানটাকে ওর জন্য হলে আবার ভালো মনে করেন না! ম্যাগ: অরিন্থিয়া: তোমার বর্তমান অবস্থানে আমি প্রতিষ্ঠিত করি নি তোমাকে। তুমি নিজেই ঐ অবস্থানে নিয়েছ তোমাকে। বাধা দিতে পারি নি আমি। একটা ডেইজি ফুলের মত আমাকে আহরণ করেছ তুমি। অরি: বাধা দিতে চেয়েছিলেন কি আমাকে? ম্যাগ: আহ্, না। প্রলোভনে কখনো বাধা দেই না আমি। কারণ আমি লক্ষ্য করেছি যে, যে-সকল জিনিসগুলো আমার জন্য খারাপ ওগুলো আমাকে প্রলোভিত করে না। অরি: ঠিক আছে– তাহলে, তাহলে কি জন্য আর কথা বলছি আমরা? ম্যাগ: ভুলে গেছি। মনে হয় তোমার সঙ্গে আমার স্থান পরিবর্তন-এর অসম্ভাব্যতা ব্যাখ্যা করছিলাম। অরি: প্রার্থনা করুন। কেন অসম্ভব? ম্যাগ: তোমাকে বোঝাতে পারব না। দেখ, প্রকৃতপক্ষে কখনো বিবাহিত ছিলে না তুমি, যদিও দু’জন বিমোহিতকে বেদীতে উঠিয়েছিলে, ওদের একজনকে দিয়ে একটা সন্তানেরও জন্ম দিয়েছিলে। তোমার স্বামী হওয়া কেবল একটা কাজÑ যার জন্য একজন যে-রকম করবে অন্যজনও তাই করবে, এবং দ্বিতীয়জন যা করেছিল, ডিভোর্স কোর্টে ছয় মাসের নোটিশ দেয়ার শর্তে। আমার স্ত্রী হওয়া একেবারেই ভিন্ন ব্যপার। জেমিনার মর্যাদায় বিন্দুমাত্র অপবাদ আমার মুখে চাবুক মারার মত কঠিনভাবে আঘাত করবে আমাকে। কিন্তু তোমার ব্যপারে, যেভাবেই হোক, শারিরীক পাশবিকতাকেও পরোয়া করি না। অরি: আমার মর্যাদা থেকে কোনো কিছুই কলুষিত করতে পারবে না আমাকে: এটা স্বর্গীয়। ওরটা হচ্ছে একটা সাধারণ প্রথা মাত্র: এবং এটাকে চ্যালেঞ্জ করা হয় যখন, আপনি সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠেন। ম্যাগ: বিন্দুমাত্রও না। এটার কারণ, ও হচ্ছে আমার প্রকৃত জীবনযাত্রার একটা অঙ্গ! তুমি হলে একটা পরীর দেশের মেয়ে। অরি: ধরুন, ও মরে গেল! আপনিও মরে যাবেন? ম্যাগ: সঙ্গে সঙ্গেই না। ওকে ছাড়া যতটুকু পারা যায় ততটুকু চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে আমাকে, যদিও এটার ভবিষ্যত আতঙ্কিত করে আমাকে। অরি: আমাকে বিয়ে না করে ওকে ছাড়া চলতে পারবেন না আপনি। ম্যাগ: প্রিয় অরিন্থিয়া, আমার বরং একটা শয়তানী বিয়ে করা ঠিক হবে। বউ হয়ে থাকা তোমার কর্ম না। অরি: এ রকম ভাবেন আপনি কারণ কোনো কল্পনা নেই আপনার। আমাকে জানেন না আপনি, প্রকৃতপক্ষে আপনার অধিকারে কখনো থাকি নি আমি। এই পৃথিবীতে যতটুকু না সুখী এ পর্যন্ত হয়েছে কেউ, তার চেয়েও বেশি সুখী আমি করতে পারি আপনাকে। ম্যাগ: আমাদের বিস্ময়কর, নিরীহ স্বজনেরা ইতোমধ্যে যতটুকু সুখী করেছে আমাকে তার চেয়ে বেশি সুখী করতে তোমাকে বিরত রাখব আমি। অরি: [অস্থিরভাবে দাঁড়িয়ে] একজন শিশুর মত কথা বলেন আপনি, অথবা ষণ্ডের মত। [তাঁর দিকে ঘুরে] আপনাকে একটা নতুন জীবন দিতে পারি আমি: ওরকম একটা, যে সম্পর্কে আপনার ধারণা নেই। আশ্চর্যরকম মনোহর একটা শিশু উপহার দিতে পারি আপনাকে: আমার ব্যাসিলের চেয়ে সুন্দর ফুটফুটে বালক আর কখনো দেখেছেন আপনি? ম্যাগ: তোমার শিশুরা সুন্দর; কিন্তু ওরা পরীশিশু; এ রকম কয়েকটা পরীশিশু আমারও আছে। ডিভোর্স দিয়ে পরীদের পথ হতে ওদেরকে ঝেড়ে ফেলে দেয়া যায় না। অরি: সংক্ষেপে বলি, যখন সোনালি মুহূর্তটা আসে আপনার– যখন স্বর্গের দরোজাগুলো খুলে যায় আপনার সামনে, তখন ঐ শুয়োরের খোঁয়ার থেকে বেরিয়ে আসতে ভয় পান আপনি। ম্যাগ: আমি যদি একটা শুয়োর হই, তাহলে তো শুয়োরের খোয়ারই আমার জন্য আসল জায়গা। অরি: এটা বুঝতে পারি না আমি। যখন ওদেরকে জানা হয়ে যায় তখন দেখা যায় যে সব পুরুষেরাই বোকা আর নৈতিকভাবে ভীরু। এ পর্যন্ত যত মানুষকে জেনেছি আমি তার মধ্যে আপনি একজন বোকা অথবা নৈতিক ভীরুর চেয়েও বেশি। প্রথম সারির একজন মেয়ে-মানুষের সব বৈশিষ্ট্য রয়েছে আপনার মধ্যে। যখন এই পৃথিবী ছেড়ে যাব আমি এবং ঐ উর্ধলোকে উড়ে যাব, যেটা প্রকৃত ও সনাতন গৃহ আমার, সেখানে অনুসরণ করতে পারেন আমাকে; আপনার কাছে বলতে পারি আমি, যেহেতু অন্য কারো কাছে বলতে পারি না; এবং ঐ ব্যপারগুলো আমার কাছে বলতে পারেন আপনি, যেগুলো আপনার দুষ্ট স্ত্রী-লোকটাকে কাঁদিয়ে ফেলতে পারে। আপনার নাগালে রয়েছে এমন অনেকের চেয়ে আপনার চাহিদার অনেক কিছুই পাবেন আমার মধ্যে। আপনার নাগালে আছে এমন অনেক মহিলার চেয়ে আমার অনেক বেশি কিছু আপনার মধ্যে আছে। একে অপরের জন্য সৃষ্ট আমরা: আকাশের গায়ে এটা লেখা আছে যে আপনি এবং আমি হচ্ছি, যথাক্রমে রাজা ও রানি। কেমন করে ইতস্তত করেন আপনি? আপনার জন্য কিসের আকর্ষণ আছে ওখানে, ঐ স্বাস্থ্যবান, অতি-সাধারণ, হাসিখুশি, গুদুগুদু বাচ্চাগুলো, আর আপনার গৃহিনী স্ত্রী, কুৎসিত পোশাকের ইতর রমনীরা, ভুঁইফোড় লোকেরা, ষড়যন্ত্রকারীরা, আর ভাঁড়ের দল, যারা ভাবে যে ওরাই দেশটা শাসন করছে, অথচ, প্রকৃতপক্ষে আপনার সঙ্গে কলহে লিপ্ত ওরা? দেখুন একটিবার আমার দিকে, হে মানুষ: আরেকবার, আরেকবার! ওরকম এক কোটির চেয়েও কি শ্রেয় নই আমি? নর্দমা থেকে সূর্য কতটুকু উঁচুতে, আমার সঙ্গে জীবনযাপন কি ততটুকু উঁচুতে না? ম্যাগ: হ্যাঁ, হ্যাঁ, হ্যাঁ, হ্যাঁ, অতি অবশ্যই। তুমি অপরূপা: তুমি স্বর্গীয় [একটা জয়োল্লাস গোপন করতে পারবে না অরিন্থিয়া] এবং দারুণ রকম আনন্দদায়িনী তুমি। [অরিন্থিয়ার উল্লসিত হওয়ার জন্য পরিবেশটা তুঙ্গে, কিন্তু সে এটার বহিপ্রকাশ না করার বিষয়ে অত্যন্ত চতুর থাকবে। দেহের আরেকটা ভঙ্গিতে, চুপসে যাওয়া এই সময়ে, বা-দিকে বসে পড়বে সে, ধৈর্য দেখানো প্রকাশ করবে, এবং রাজার উঁচুস্বরের বক্তৃতা শুরু হলে নীরবে তা শুনতে থাকবে।] ম্যাগ: সম্ভবত প্রকৃতি কখনো তার গোলাপফুলগুলোকে বাধাকপিতে কলম করে বসিয়ে দেবে, এবং প্রতিটা নারীকে উল্লসিত করবে যেমন তুমি হয়েছ; কি একটা জাঁকালো কৌতুকপূর্ণ জীবনই না হবে তখন! কিন্তু বল তো, কেন এখানে আসি আমি? তোমার সঙ্গে এ রকম কথা বলার আনন্দ পাওয়ার জন্য যখন আমার রাজকীয় ব্যপারগুলো থেকে ঘণ্টাখানেকের অবকাশ প্রয়োজন: যখন আমার দুষ্ট স্ত্রী আমাকে চিন্তান্বিত করতে থাকে, অথবা আমার অবাধ্য পরিষদ আমাকে বাধা দিতে থাকে: যখন, ডাক্তারেরা যেমন বলেন, যে জিনিসটা আমার প্রয়োজন তা হচ্ছে একটা পরিবর্তন। তুমি দেখ, সোনা আমার, এই বিশ্বে এমন মূল্যবান স্ত্রী আর একটাও নেই, এমন প্রফুল্ল শিশুর দল আর একটাও নেই, কুশলী পরিষদও আরেকটা নেই যাদেরকে নিয়ে কোনো কালে ক্লান্ত হওয়াও অসম্ভব। জেমিনার নিজস্ব সীমাবদ্ধতা আছে, যেমন তুমি দেখেছ। এবং আমারও সীমাবদ্ধতা আছে। এখন যদি আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলো একেবারেই অনুরূপ হয় তাহলে অন্য কারো সঙ্গেই কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করা আমার উচিত হবে না; এবং ওরও তাই। কিন্তু এমনটা যেহেতু কখনো ঘটে না, আমরা অন্যান্য সব বিবাহিত যুগলের মতই: অর্থাৎ, এমন সব বিষয় রয়েছে যা আমাদের মধ্যে কখনোই আলোচিত হতে পারে না কারণ ওগুলো স্পর্শকাতর। এমন লোক আছে যাদের সম্পর্কে একে অপরের কাছে এড়িয়ে যাই আমরা কারণ আমাদের একজন ওদেরকে পছন্দ করে না, এটা বোঝে না, এটাকে অবিশ্বাস করে, ভয় পায়। কোনো কারণ ছাড়া নয় অবশ্য; স্ত্রীদের কাছে তোমার মত মহিলারা অত্যন্ত বিপদজনক। কিন্তু আমি তোমার মত মেয়েদের অপছন্দ করি না: এটা বুঝি আমি, নিজে এই ধারার সামান্য একজন হিসেবে। সব কিছুতেই এ সম্পর্কে ভীত নই আমি, যদিও পরোক্ষে এর বিন্দুমাত্র উল্লেখ আমার স্ত্রীর মুখে কালো ছায়া ফেলে। এটা সম্পর্কে যখন মুক্তভাবে কথা বলতে চাই, এখানে চলে আসি এবং তোমার সঙ্গে কথা বলি। এটা ধরে নেই যে, ওর বন্ধুদের সঙ্গে যে-সব মানুষদের সম্পর্কে কথা বলে ও, আমার সঙ্গে ওদের সম্পর্কে কখনো কিছু বলে না। পুরুষ-বন্ধুরা আছে ওর, ওদের কাছ থেকে যা পেতে পারে ও, আমার কাছ থেকে তা পারে না। যদি এ রকমটা না করে তাহলে আমার সীমারেখার মধ্যে সীমিত হয়ে যাবে সে, এটার শেষ হবে আমাকে ঘৃণা করার মধ্য দিয়ে। এ জন্য আমার সাধ্য মত চেষ্টা করি, ওর পুরুষ-বন্ধুদের সঙ্গে আন্তরিক থাকতে। অরি: একটা আশ্চর্য পরিবারের একজন আদর্শ স্বামী! যখন এই আদর্শ গৃহস্থালীটা বিরক্তিকর হয়ে ওঠে, তখন আমি হচ্ছি ‘বিকল্প’। ম্যাগ: ঠিক আছে, এর বেশি কি জিজ্ঞেস করতে পার তুমি? একাত্মা এক দেহ হতে চাওয়ার মত সাধারণ ভুলটার মধ্যে যেন না পড়ি আমরা। প্রতিটা নক্ষত্রেরই নিজস্ব গতিপথ রয়েছে; এবং ঐ নক্ষত্রটা এবং তার নিকটতম প্রতিবেশীর মধ্যে যে কেবল প্রবল আকর্ষণ আছে তাই না, যোজন যোজন দূরত্বও রয়েছে। দূরত্বের চেয়ে আকর্ষণটা যখন প্রবল হয়ে ওঠে তখন ঐ দুটো পরস্পরকে আলিঙ্গন করে না: বিকট সংঘর্ষে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় ওরা। আমাদের দু’জনেরও গতিপথ পৃথক, একটা ধ্বংসাত্মক সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য আমাদেরও একটা অসীম দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। সদাচরণের গোপন রহস্য হচ্ছে আমাদের দূরত্ব বজায় রাখা; এই সদাচরণ ব্যতীত মানব সমাজের টিকে থাকা অসম্ভব এবং দুঃসহ। অরি: অন্য কোনো মহিলা কি আপনার এই ধর্মোপদেশগুলো সহ্য করে, এবং পছন্দ করে এসব? ম্যাগ: অরিন্থিয়া: দুটো শিশুর মত শুধু শুধু খেলায় মেতেছি আমরা; পরীর দেশে আমার রানি হিসেবে অবশ্যই পরিতৃপ্ত থাকতে হবে তোমাকে। এবং, [উঠে দাঁড়িয়ে] অবশ্যই কাজে ফিরে যেতে হবে আমাকে। অরি: আমার সঙ্গে থাকার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজ আর কি আছে আপনার? ম্যাগ: কিছুই না। অরি: তাহলে বসুন। ম্যাগ: দুর্ভাগ্যবশত, সরকারের এই নির্বোধ কর্মকাণ্ডগুলো অবশ্যই চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এবং সাধারণত যে রকম থাকে, আজকের বিকেলের জন্যও সমস্যা একটা সৃষ্টি হয়ে আছে। অরি: কিন্তু সমস্যাটা পাঁচটার আগে শুরু হচ্ছে না: সেমপ্রোনিয়াসের কাছ থেকে এ বিষয়ে সব শুনেছি। ঐ লোভি চক্রান্তকারী প্রোটিয়াসকে উৎসাহ দেন কেন আপনি? আপনাকে প্রতারণা করে সে। সবাইকেই করে। এমনকি নিজেকেও। এবং অবশ্যই ঐ পরিষদকেও। আপনার জন্য অসম্মানের বিষয় এটা: ভিড় উপচে-পড়া রেইলের একটা তৃতীয় শ্রেণির বগি এটা। সময় নষ্ট করার জন্য এসব ইতর প্রাণীদের আস্কারা দেন কেন? মোটের উপর, কেন রাখা হয়েছে আপনাকে? একজন রাজা হিসেবে: সাধারণ মানুষের উপর আপনার জুতোগুলো ঝাড়ার জন্য? ম্যাগ: হুঁ: কিন্তু এই রাজ-ব্যবসা, যে নামে আমেরিকানরা ডাকে এটাকে, গনতন্ত্রের সঙ্গে এমনভাবে মিলেমিশে গেছে যে দেশের অর্ধেকাংশ কামনা করে যে আমার নিখুঁত চকচকে বুটগুলো পরিষদের উপর ঝাড়-মোছ করি। আর বাকি অর্ধেক মনে করে যে পরিষদ যেন ওদের নোংরা কাদামাখা বুটগুলো আমার উপর ঝাড়ে। পাঁচটার সময় একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে যে আমাদের মধ্যে পা-পোশটা বানানো হচ্ছে কাকে। অরি: এবং আপনি প্রোটিয়াসের সঙ্গে ক্ষমতা যুদ্ধে অবনত হবেন? ম্যাগ: আহ্ না: কখনোই যুদ্ধ করি না আমি। কিন্তু জয়ী হই কখনো কখনো। অরি: যদি ঐ প্রবঞ্চক ও ভঙ্গিবাজ দ্বারা ধরাশায়ী হ’ন আপনি, তাহলে আমাকে আর আমন্ত্রণ করতে সাহস দেখাবেন না। ম্যাগ: প্রোটিয়াস একজন চতুর ব্যক্তি: এমনকি কোনো কোনো উপলক্ষে একজন সুন্দর ব্যক্তি: তাকে ধরাশায়ী না করতে পারায় কোনো সন্তুষ্টি আসবে না আমার: মানুষগুলোকে ধরাশায়ী করা ঘৃণা করি আমি। কৌশলে ওদের পরাজিত করানোর মধ্যে এক ধরনের নির্দোষ কৌতুক থাকতে পারে। অরি: ম্যাগনাস, আপনি হচ্ছেন একজন পুতু-পুতু-বালক। যদি একজন প্রকৃত পুরুষ হতেন তাহলে ওকে মেরে জেলি বানানোতে সঠিক আনন্দ আসত আপনার। ম্যাগ: একজন প্রকৃত মানুষ কখনো একজন রাজার মত করে কিছু করতে পারে না। আমি কেবল এক দেবমূর্তি, প্রিয়তমে; এবং সবটুকু, আমি যা পারি তা হচ্ছে একজন ক্রোধান্বিত দেবমূর্তির প্রতি সীমারেখা টেনে দিতে [ঘড়ি দেখবেন] আসলেই বেরিয়ে যেতে হচ্ছে আমার এখন। শুভ বিদায়। অরি: [হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে] চারটা বেজে পঁচিশ মিনিট মাত্র এখন। অনেক দেরি পাঁচটা বাজার। ম্যাগ: হুঁ, কিন্তু চা দেবে সাড়ে চারটায়। অরি: [সর্পিল বর্ষার মত বাহুতে রাজাকে ধরে ফেলে ] চায়ের জন্য অস্থির হবেন না, আমি চা খাওয়াব আপনাকে। ম্যাগ: অসম্ভব, আমার সোনার মেয়ে। অপেক্ষা করে থাকা পছন্দ করবে না জেমিনা। অরি: আহ্, ছাড়–ন আপনার জেমিনা। ওর কাছে যাওয়ার জন্য আমাকে ছেড়ে যাচ্ছেন না আপনি [এত জোরে রাজাকে টান দেবে যে সোফাতে ওর পাশে পড়ে যাবেন তিনি।] ম্যাগ: প্রিয় আমার, আমাকে যে অবশ্যই যেতে হয়। অরি: না, আজকে না। শুনুন, ম্যাগনাস। একান্তই বিশেষ কিছু বলার আছে আমার আপনাকে। ম্যাগ: তোমার নাই অরিন্থিয়া। আমার স্ত্রীকে উত্যক্ত করার জন্যই কেবল দেরি করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছ। [উঠতে চেষ্টা করবেন, আবার টেনে বসিয়ে দেয়া হবে তাঁকে] আমাকে যেতে দাও, প্লীÑজ। অরি: [ধরে রেখে] স্ত্রীর প্রতি এত ভীত কেন আপনি? লন্ডনের হাসির খোরাক আপনি। এতটাই স্ত্রৈণ? আহা! ম্যাগ: স্ত্রৈণ? কেন এটা বলছ তুমি? শারিরীক উৎপীড়ণ করে অন্তত আমাকে বাধা দেয় না আমার স্ত্রী। অরি: আপনার ঐ বুড়ি ওলন্দাজের জন্য শুকিয়ে মরতে পারি না আমি। ম্যাগ: শোন অরিন্থিয়া: নিজেকে অসম্ভব করে তোল না। তুমি জান যে অবশ্যই যেতে হবে আমাকে। একটু বুঝতে চেষ্টা কর, প্লীজ। অরি: আর মাত্র দশ মিনিট। ম্যাগ: এরি মধ্যে সাড়ে চারটা বেজে গেছে। (উঠে পড়তে চেষ্টা করবেন তিনি, শক্ত করে ধরে রাখবে ওকে অরিন্থিয়া।) ম্যাগ: [নিশ্বাস নেয়ার জন্য থেমে] একেবারে নির্ভেজাল শয়তানীর জন্য এটা করছ তুমি। এত বিভৎস রকম শক্ত তুমি যে তোমাকে আহত না করে ঢিলে হতে পারি না আমি। আমার কি প্রহরী ডাকা আবশ্যক? অরি: তাই করুন, তাই করুন। আগামীকালের প্রতিটা পত্রিকায় একটা ভালো সংবাদ হতে পারে এটা। ম্যাগ: পাষণ্ডী [তার সকল মর্যাদা কেন্দ্রীভূত করে] অরিন্থিয়া: আমি তোমাকে আদেশ করছি। অরি: [জংলি হাসিতে মেতে উঠবে]!!! ম্যাগনাস: [উন্মত্তভাবে] খুব ভালো, তাহলে, তুমি শয়তানী: তুমিই তাহলে যাচ্ছ [অকপটে অরিন্থিয়াকে সামলাবেন তিনি। কিন্তু অরিন্থিয়া নোংরা, ভোগের ইচ্ছায় দু’বাহু ছড়িয়ে ওকে জড়িয়ে ধরবে। দরজায় টোকা দেয়ার শব্দ হবে; কিন্তু এটা শুনবে না ওরা। একটু ঢিলে হতে থাকবে রাজা, অকস্মাৎ রাজার কোমড় জড়িয়ে ধরবে সে ও মেঝেতে টেনে ফেলে দেবে, একে অপরের উপর গড়াতে থাকবে। সেম প্রবেশ করবে। মুহূর্তের জন্য কলঙ্কপূর্ণ দৃশ্যটা দেখবে; তারপর চট করে বেরিয়ে যাবে; দরজা বন্ধ করে দেবে; গলা পরিষ্কার করবে, জোরে জোরে নাকে শব্দ করবে; তারপর জোরে জোরে এবং বার বার দরজায় আঘাত করবে। যোদ্ধা দু’জন তাদের যুদ্ধ থামাবে এবং তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়াবে।] ম্যাগ: ভেতরে এস। স্যাম: [প্রবেশ করতে করতে] রানি-মা আমাকে পাঠিয়েছেন আপনাকে মনে করিয়ে দেয়ার জন্য যে চা প্রস্তুত হয়েছে, স্যার। ম্যাগ: ধন্যবাদ [তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যাবেন।] অরি: [হাঁপাতে থাকবে, কিন্তু নিজের ব্যপারে খুবই অসন্তুষ্ট] রাজা যখন এখানে থাকেন তখন সবই ভুলে যান। এবং আমিও, ভয় হচ্ছে আমার। কি যে দুঃখিত আমি! স্যাম: [দৃঢ়ভাবে] কোনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। কি ঘটেছে, আমি দেখেছি। [বেরিয়ে যাবে।] অরি: পশু! চাবির ফুটো দিয়ে আবশ্যই দেখেছে ও [হাত দুটোকে উপরে তুলে দেবে, হাসির একটা অঙ্গভঙ্গি করবে, নেচে নেচে লেখার টেবিলে ওর চেয়ারটাতে যেয়ে বসবে।]

Facebook Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top