শকুন্তলা চৌধুরী: অবলাকান্তের বঙ্গ ‘দর্শন’-২

অবলাকান্ত খাতা খুলিয়া লিখিলেন — “শ্রীমত শ্রীযুক্ত বাবু মন্দ্রিল চট্টরাজ মহাশয়ের সহিত আমি একমত নহি। বঙ্গভাষার মৃত্যু হয় নাই, তাহাকে কোনো মারণ রোগেও ধরে নাই। সে দিব্য বহাল তবিয়তে বাঁচিয়া আছে এবং শ্রী শ্রী মন্দ্রিল বাবুমহাশয়ের নাসিকার সমুখ দিয়া ধুতির কোঁচা উড়াইয়া, থুড়ি শার্টের কলার উঁচাইয়া, কলিকাতা হইতে লণ্ডন এবং তথা হইতে নিউ ইয়র্ক হাওয়া খাইয়া ঘুরিয়া বেড়াইতেছে। ইহা দেখিয়া শ্রীযুক্ত বাবু মন্দ্রিল মহাশয়ের একটু রাগ হইয়াছে বটে, কারণ তিনি নিজে তাঁহার ভাষণরাজি লইয়া প্রতিনিয়ত অতদূর পৌঁছাইতে পারিতেছেন না (এবং যদাপি ক্কচিৎ পৌঁছাইতেছেন, ফিরিয়া আসিয়াই যাহাতে খাইয়াছিলেন তাহার উপর দূষণীয় কর্ম করিতেছেন)। অতএব বাবুমহাশয় কলিকাতার মধ্যেই তুফান তুলিয়া বেড়াইতেছেন — তাহা চায়ের পেয়ালায় কিনা, সে কথা বলিতে পারিব না। তবে তাঁহার বাক্যের ছটায় সেইদিন ক্লাবের বাবুরা চক্ষুতে আঁধার দেখিয়াছিলেন এবং জনৈক সংবাদদাতা তাঁহার চাকরিটি প্রায় খোয়াইতে বসিয়াছিলেন — ইহা শুনিয়াছি। সংবাদদাতার অপরাধ ইহাই যে উনি হিন্দী-মিশ্রিত ‘অশুদ্ধ’ বাংলা ব্যবহার করিয়াছিলেন। উক্ত সংবাদদাতার প্রতিবেশীর স্ত্রীয়ের ভ্রাতার শ্যালকের কন্যার ননদিনীর শ্বশ্রুমাতা হইতেছে এই অধমের পাড়া-সম্পর্কে দিদি। দিদি আসিয়া বলিলেন – ‘ইহা কি ঠিক হইয়াছে? অবলাকান্ত, তোমার কি মত?’ অতএব, ইচ্ছা না থাকিলেও, দিদির সম্মান রক্ষার্থ, মতামত লিখিতে বসিলাম। এবং বঙ্গভাষাকে লইয়া একটু ‘দর্শন’ করিলাম — অর্থাৎ দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বঙ্গভাষাকে দেখিবার চেষ্টায় রত হইলাম। পাঠক, আমার দর্শনের সহিত আপনার দর্শন নাই মিলিতে পারে — নিজগুণে ক্ষমা করিয়া লইবেন।

আমি বলি যে ভাষা বাঁচিয়া থাকে মানুষের ভালোবাসায়, মুখের কথায় — হউক না সে ভাষা কিঞ্চিৎ ‘অশুদ্ধ’। যে ভাষা পণ্ডিতের তর্জন আর নিয়মের কড়াকড়িতে আবদ্ধ থাকে, সে ভাষায় মানুষ ক্রমশঃ কথা কহা বন্ধ করিয়া দেয় — ভাষার প্রতি মানুষের ভালোবাসা হারাইয়া যায়। সেই ভাষা বদ্ধ সমাজে কিছুদিন ঘুরপাক খাইয়া ফেরে, অবশেষে মৃত্যুবরণ করিয়া পুস্তকের পাতায় অপরিবর্তিত রূপে থাকিয়া যায়। যেমন সংস্কৃত ভাষা থাকিয়া গিয়াছে। বঙ্গভাষার জন্য যদি আমরা এমন শাসন-তর্জনই চাই, তাহা হইলে বলিতে হইবে যে আমরা বঙ্গভাষার মৃত্যুদণ্ড কামনা করিতেছি। কিন্তু তাহা তো সত্যি নহে! বাবু শ্রীযুক্ত মন্দ্রিল মহাশয়ও নিশ্চয়ই এমন কামনা করিয়া থাকেন না। আসল কথা হইল এই যে, তিনি যাহা কামনা করেন তাহার সহিত বাস্তবের মিল ঘটিতেছে না। এই মিল না ঘটারও কয়েকটি কারণ আছে। সেইগুলি গুছাইয়া লিখিব বলিয়াই, দিদির কথায় কলম তুলিয়াছি।

লিখিতে বসিলে একটু গোড়া হইতেই লিখিতে হয়, নতুবা সূত্র হারাইবার সম্ভাবনা বাড়িয়া উঠে।

তা গোড়ার কথাটা হইল এই যে, ‘জন্ম মৃত্যু বিয়া – তিন, বিধাতা নিয়া’। অর্থাৎ কিনা বিধাতাপুরুষ ব্যতিরেকে আর কেহ এই তিনের সম্বন্ধে নির্ণয় লইতে পারেন না। বাবু মন্দ্রিল মহাশয় যদি বিধাতাপুরুষ না হইয়া থাকেন, তাহা হইলে তাঁহার বঙ্গভাষার সম্বন্ধে যত্র তত্র নিদান হাঁকা উচিত নহে।

বঙ্গভাষা কাহারো ডাক শুনিয়া জন্ম লয় নাই এবং কাহারো হাঁক শুনিয়া সে মৃত্যুও বরণ করিবে না। ঈশ্বরের ইচ্ছায় সে ধরাধামে আসিয়াছে যাতে আমাদের মতো বঙ্গসন্তানের মুখে বোল ফুটে, এবং সেই কর্মে ব্রতী হইয়া নিরলস সে বিশ্বের একপ্রান্ত হইতে আরেকপ্রান্ত পর্যন্ত আমাদের মুখে বোল ফুটাইতেছে — বাবু মন্দ্রিল মহাশয়ের মুখেও।

কথা হইল এই যে, সেই বোলটি কেমন? ইহার কোনো জলের মতো সরল উত্তর নাই। কারণ ইহা একটি জীবন্ত ভাষা, সুতরাং সর্বদাই পরিবর্তনশীল। পাঠক, আপনি শৈশবে যেই রূপে মুখে প্রথম বোলটি ফুটাইয়াছিলেন, আজও কি সেই রূপেই ফুটাইয়া থাকেন? আপনার শ্রীমুখের বোলটি যেমন, আমার বোলটি কি ঠিক তদ্রূপ? আপনার ঠাকুরদাদার বাচনভঙ্গি ও ভাষাটি কি আপনার পুত্র বা পৌত্রের বাচনভঙ্গি ও ভাষার সহিত মিলে? উত্তরবঙ্গের বোল শুনিয়া আপনি কি দক্ষিণবঙ্গের বোল আন্দাজ করিতে পারিবেন? দুইশত বৎসর আগের বঙ্গভাষার রচনার সহিত কি আজিকার বঙ্গভাষার লেখকের রচনা মিলে? যদি এই সবকয়টি প্রশ্নের উত্তরে আপনি ‘না’ বলিয়া থাকেন, তাহা হইলে জানিবেন যে আপনার উত্তরই আমার কথার সত্যতা প্রমাণ করিতেছে — ভাষা সর্বদাই পরিবর্তনশীল।

কথিত আছে যে, একদা জনৈক উচ্চশিক্ষিত সম্মানীয় ব্যক্তি তাঁহার ভাষণের পূর্বে দর্শকগণকে এইরূপে সম্বোধন করিয়াছিলেন — “সমবেত ভদ্রমহোদয়গণ ও মাগীগণ…”।

তৎকালীন সমাজে উহাই ছিল যথাযথ সম্বোধন, তিনি ভুল করেন নাই। শুধু তিনি কেন, ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা ভাষার সংস্কৃতায়নের আগে পর্যন্ত, শিক্ষিত বাবু ও বিবিরা সকলেই এইরূপ সম্বোধন করিতেন। পরবর্তীকালে, ঐ “মাগী” শব্দটি কিন্তু ভদ্রসমাজে বর্জিত হইয়া গেল — এমনকি, উহা কুৎসিত গালাগালি বলিয়া গণ্য হইল। আবার ইহার ঠিক বিপরীতটাও ঘটিয়াছে। বঙ্গদেশের কবিঠাকুর, তাঁহার একটি প্রবন্ধে, ‘ভাতার-খাকী’ শব্দটি এড়াইবার জন্য আধপাতা অতিরিক্ত হাঁটিয়াছিলেন। যদিচ ‘ভাতার-খাকী’ শব্দটি গ্রামবাংলায় বহুদিন ধরিয়া চলিয়া আসিতেছে এবং বর্তমান বঙ্গদেশের গালাগালির অভিধানে ‘ভাতার-খাকী’ শব্দটি নিতান্তই বালখিল্যের দলে পড়িতেছে। অতএব প্রমাণ হইতেছে যে মৌখিক এবং লিখিত ভাষা সর্বদাই পরিবর্তনশীল।

কথা হইল এই যে, ইহা কেন পরিবর্তনশীল? এইরূপ পরিবর্তনের কারণ কি? কারণ বহু, তবে এককথায় বলিতে গেলে — কারণ হইল সমাজের গতিশীলতা এবং তৎসহিত ভাষার প্রগতি।  বদ্ধ সমাজ আর বদ্ধ কূয়ায় তফাত নাই — উহা প্রগতির পরিপন্থী। উন্মুক্ত সমাজে বাহির হইতে আসিয়া পড়ে অন্য ভাষার প্রভাব, আঞ্চলিক উপভাষার প্রভাব — জানালা দিয়া বাহিরের আলো-বাতাস আসিবার মতো। উহা বাঁচিবার জন্য প্রয়োজনীয়, প্রগতির জন্য প্রয়োজনীয়। বাঙালী চিরদিনের প্রগতিশীল, চিরকাল সে উন্মুক্ত হাওয়ার স্বপক্ষে — আজ তাহার ব্যতিক্রম কি করিয়া হইবে?

অতএব, ইহা মানিয়া লইতে হইবে যে গতিমান সমাজ ও বিশ্বায়নের সহিত তাল রাখিয়া বহিরাগত শব্দরা বঙ্গভাষার সহিত মিশিয়া যাইবে এবং কালে-কালে বঙ্গভাষাকে নতুন রূপ দিবে। প্রবাসী বঙ্গসন্তানের ‘অশুদ্ধ’ কথোপকথনে, প্রতিবেশী রাজ্যের ‘অপশব্দে’র প্রভাবে, বঙ্গভাষার বর্ণসঙ্কর ঘটিবে। যেমন ইংরাজী ভাষারও ঘটিয়াছে বা ঘটিতেছে। তাহাতে শঙ্কিত হইবার কোন কারণ নাই। নিজের শক্তিতে বিশ্বাস থাকিলে, আমরা ‘গেল গেল’ রব তুলিব না। ইংল্যাণ্ডের ইংরাজী ভাষাকে আমেরিকানরা দীর্ঘদিন হইল পাল্টাইয়া দিয়াছে। অধুনা, ভারতীয়রাও তাহাকে পাল্টাইয়া দিতেছে। ‘গুরু’, ‘পণ্ডিত’, ‘কর্ম’ বা ‘মন্ত্র’র মতো ভারতীয় শব্দ ইংরাজী ভাষাভাষী মানুষ ও সংবাদপত্র প্রতিনিয়ত ব্যবহার করিয়া থাকে — ইংল্যাণ্ড ও আমেরিকা দুই দেশেই। তথাপি, কেহ সেইদেশে ‘গেল গেল’ রব তুলিতেছে না। কারণ ইংরাজী ভাষাভাষীদের মনে ইংরাজী ভাষার অস্তিত্ব লইয়া কোনো শঙ্কা নাই। উনারা জানেন যে ইংরাজী ভাষা টিকিয়া থাকিবে — পরিবর্তিত রূপে হইলেও, টিকিয়া থাকিবে। উহাই আসল কথা — বাঁচিতে গেলে, পরিবর্তনের স্রোতে গা মিলাইয়াই বাঁচিতে হইবে। বাঁচিতে গেলে নিজেকে শক্তিশালী করিতে হইবে। একাকী রুদ্ধ ঘরে শাসনের তর্জনী তুলিয়া বাঁচা যাইবে না।

এককথা ভুলিলে চলিবে না। তাহা হইল এই যে প্রবাসী বঙ্গসন্তানের ভাষায় অশুদ্ধতা থাকিলেও, ভালোবাসায় পরিমিতি নাই; লণ্ডন হইতে নিউইয়র্ক বহিয়া চলা বঙ্গসম্মেলনের জলসিঞ্চনে বঙ্গভাষার চারাগাছগুলি শুকাইতে পারে নাই; মুম্বাইয়ের হিন্দী ছবি সারা বিশ্বে ভারতীয় সংস্কৃতিকে ভুলিতে দেয় নাই । ইহার মূল্য শ্রীশ্রী মন্দ্রিল বাবুমহাশয় বুঝেন কিনা জানিনা, তবে এই স্বল্পবুদ্ধি অবলাকান্ত বুঝে। ট্যাঁকের জোর এবং গলার জোর বড়ো জোর — না হইলে আজ সারা বিশ্ব বেগুনকে ‘ব্রিঞ্জল’ না বলিয়া ‘এগপ্লান্ট’ বলিয়া ডাকে? ঢেঁড়সকে ‘লেডিস্ ফিঙ্গার’ না বলিয়া ‘ওকরা’ বলিয়া ডাকে? বঙ্গনারী নিজ কন্যাকে ‘বেটা’ বলিয়া ডাকে? বঙ্গপিতা পুত্রের বিবাহে ডি জে আনিয়া নৃত্যসন্ধ্যা করিয়া থাকে?

…তবে আমি বলি যে যদি করিয়াই থাকে, তাহাতে কিছু ক্ষতি হইল কি? বৃটিশ কি আমেরিকান হইয়া গেল, নাকি বঙ্গসন্তান অবাঙালী হইয়া গেল? কিছুই হইল না, ধরণীও রসাতলে যাইল না। শুধু ইংরাজীভাষা এবং বঙ্গভাষা আরেকটু প্রসারিত হইল। হিন্দী ছবি কবিঠাকুরের ‘একলা চল রে’ গানটিকে আরও বহু কর্ণকুহরে তুলিয়া দিল। অন্য মহাদেশে জন্মানো দ্বিতীয় প্রজন্মের বঙ্গসন্তানটি বঙ্গভাষাকে কিঞ্চিৎ আয়ত্তে আনিয়াছে ভাবিয়া উৎসাহিত হইল।…

বঙ্গভাষাকে দেশেবিদেশে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বাঁচাইয়া রাখিবার জন্য, এইসবের মূল্য বড়ো কম নহে — এইটি বুঝিতে হইবে। বুঝিতে হইবে যে খুঁট হইতে খুলিয়া দিলেও, গৃহের জীব গৃহেই থাকিবে — বাহিরের আলো-বাতাস পাইয়া বরং আনন্দেই বর্দ্ধিত হইতে থাকিবে।

১০

এক্ষণে, আমি আসিব সর্বশেষ আলোচনায়। জগতে পরিবর্তনশীল বস্তু কি বা কাহারা?

ইহার উত্তরটি কিন্তু সরল — যাহার প্রাণ আছে, তাহাই পরিবর্তনশীল।

পরিবর্তন জীবনেরই ধর্ম — জড়ের নহে, মৃতেরও নহে।

অতএব বঙ্গভাষা বাঁচিয়া আছে, সগৌরবে বাঁচিয়া আছে, পরিবর্তনের তালে তাল মিলাইয়া বাঁচিয়া আছে। সে অসুস্থ জড়দ্গব হইয়া যায় নাই। এবং যতক্ষণ সে বাঁচিয়া আছে, ততক্ষণ আমি তাহার জয়ধ্বনি দিব — দিবই দিব! কদাচ তাহার মৃত্যুকামনা করিব না…বাবু শ্রীযুক্ত মন্দ্রিল মহাশয়ের ভাষণের মাথার দিব্য !”

এই বলিয়া অবলাকান্ত কলম রাখিয়া, খাতা বন্ধ করিয়া, উন্মুক্ত হাওয়ায় হাঁটিতে বাহির হইয়া গেলেন।

 

শকুন্তলা চৌধুরী

ডঃ শকুন্তলা চৌধুরীর জন্ম কলকাতায়, বড় হয়েছেন বি. ই. কলেজ ক্যাম্পাসের প্রফেসরস্ কোয়ার্টারে। পড়াশোনা কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিয়ে এবং তথ্যবিজ্ঞানে পিএইচডি করার সূত্রে বিদেশগমন। কর্মসূত্রে বর্তমানে মিশিগানের বাসিন্দা। স্কুলজীবন থেকেই নিয়মিত লেখেন। সানন্দা, বাতায়ন, পরবাস, সাহিত্যকাফে, ঋতবাক এবং আরো বহু পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে শকুন্তলার কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস। শকুন্তলার লেখা গান ভিডিওতে পরিবেশন করেছেন শ্রীকান্ত আচার্য, রূপঙ্কর বাগচী, নচিকেতা চক্রবর্তী, কায়া ব্যাণ্ড।
প্রকাশিত গ্রন্থ পৃথা (ঋতবাক প্রকাশনী)।

 

Facebook Comments

2 Comments

  1. Asim Deb

    শকুন্তলার লেখার সাথে আমার অল্পদিনের পরিচয়। ওকে আমি আগেও বলেছি, সহজ করে সহজ কথাগুলো কি ভাবে এত সহজে লিখতে পারিস? এই প্রথম বঙ্কিমের ভাষায় ওর লেখা পড়লাম, বেশ ভালো লিখেছে।

  2. Asim Deb

    শকুন্তলার লেখার সাথে আমার অল্পদিনের পরিচয়। সহজ করে সহজ কথাগুলো সুন্দর করে লেখা। এই প্রথম বঙ্কিমের ভাষায় ওর লেখা পড়লাম, বেশ ভালো লিখেছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top