আমিরুল আলম খানের অনুবাদ: দ্য আন্ডারগ্রাউন্ড রেলরোড

দ্য আন্ডারগ্রাউন্ড রেলরোড

রিজবে

আর্নল্ড রিজবের বাবা একজন কর্মকার। গনগনে উত্তপ্ত লোহাখণ্ডের অস্তমান সূর্যের মত আবীর রঙ তাকে মোহাবিষ্ট রাখে। একখণ্ড লোহা। আহা! আগুনের তাপে রং বদলে লাল টুকটুকে হচ্ছে; নরম হচ্ছে। তপ্ত নরম সেই লোহা পিটিয়ে পিটিয়ে ইচ্ছেমত মুচড়ে দুমড়ে নানান হাল-হাতিয়ার তৈরি করা এক পরম আনন্দ!

টম বার্ড তার একজন সেলুন পার্টনার। লোকটা দো-আঁশলা। প্রচুর হুইস্কি খেয়ে মাতাল হয়ে থাকে। রাতে মদে চুর হয়ে সে পরামাত্মার সাথে আলাপ জুড়ে দেয়। এই পৃথিবী, সূর্য, গাছপালা, প্রকৃতি সর্বত্র পরমাত্মা বিরাজমান। এসবের মধ্য দিয়ে তিনি প্রবাহিত হন এবং সব কিছুকে অলৌকিক এক সূত্রে বেঁধে রাখেন। টম বার্ডের বাবার অবশ্য এসবে বিশ্বাস নেই। কিন্তু তার কৌতুহল লোহায় পরমাত্মা থাকেন কি না, তা নিয়ে। একমাত্র এই গনগনে তপ্ত লোহাখণ্ড ছাড়া অন্য কোথাও পরমাত্মায় তার বিশ্বাস নেই। তিনি আগ্নেয়গিরির কথা পড়েছেন, জানেন প্রাচীন কালে এক অগ্ন্যুৎপাতে পম্পাই নগরী ধ্বংসের কথাও। জ¦লন্ত লাভাস্রোত আসলে ধরিত্রীমাতার শোণিত প্রবাহ। পরমাত্মা এভাবেই অনেক কিছুই ওলোটপালট করে থাকেন। মানুষ যাতে গজাল, ঘোড়ার খুঁরের নাল, লাঙল, ছুুরি, বন্দুক, শেকল ইত্যাদি তৈরি করতে পারে সে জন্য পরমাত্মা এভাবেই নানা ধাতু সরবরাহ করেন। এটাই তার বিশ্বাস।

নেহাইয়ের ওপর লাল গনগনে তপ্ত পেনসিলভেনিয়ান লোহা রেখে হাতুড়ি দিয়ে জোরে জোরে পিটিয়ে পিটিয়ে বাবা যখন কিছু তৈরি করেন কখনও সখনও রিজবে এক কোণায় দাঁড়িয়ে তা দেখে। গা দিয়ে দরদর করে ঘাম ঝরতে থাকে বাবার আর তাতে কালিঝুলি মেখে মাথা থেকে পা পর্যন্ত নিগ্রোদের চেয়েও ঘোর কৃষ্ণ আফ্রিকান দানব মনে হয় তাকে। “তোকেও একদিন এ কাজ করতে হবে, বুজলি?” একদিন বাবা তাকে বলেন।

বাবার এসব কথা রিজবের পছন্দ না। এটা এক ধরনের ঝামেলা মনে হয় তার। সে যা স্বপ্ন দেখে তেমন কোন মডেল সে খুঁজে পায় না। নেহাইয়ের দিকে তাকাতে ইচ্ছে করে না। তার মনে হয়, কামারের কাজে বাবাকে সে ছাড়িয়ে যেতে পারবে না। বাবা চেনে খাঁটি লোহা; তেমনি বাজারে গেলে সেও মানুষের মুখে এক অজানা খাঁটি আদল খুঁজে ফেরে। তার মনে হয়, মানুষ শুধুই ফালতু কাজে ব্যস্ত থাকে। তারা যেসব কাজ করে তাও সব ফালতু। চাষারা নির্বোধের মত বৃষ্টিতে ভেজে, যেমন দোকানিরা বাজে পণ্যে তাক সাজিয়ে রাখে। কুমোর যেমন সব অতি ভঙ্গুর মাটির জিনিস তৈরি করে পসরা সাজাতে চায়। বাবা অবশ্য তৈরি করে ইস্পাতের সব শক্তপোক্ত হাল-হাতিয়ার। এমন কি ধনীলোকেরা যারা লন্ডনের শেয়ার বাজার বা স্থানীয় বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তারাও তার আদর্শ কেউ নয়। হ্যাঁ, তারা খুবই প্রভাববশালী ব্যক্তি, বড় বড় দালানকোঠায় বাস করেন, সব কিছুই তারাই চালান বটে; কিন্তু তাদেরও সে শ্রদ্ধা করে না। সে ভাবে, দিনশেষে গায়ে একটু কালিঝুঁলিই যদি না লাগল, তাহলে তুমি কেমন মানুষ হে।

রোজ রোজ বাবার হাতুড়ি পেটানো তার ভবিষ্যৎ ভাগ্য নির্ধারণে কোন প্রভাব ফেলল না।

চৌদ্দ বছর বয়সে সে পাহারা দলে নাম লেখায়। লম্বায় এ বয়সেই সাড়ে ছয় ফুট ছাড়িয়ে গেছে। যেমন দশাসই, তেমনি শক্তসামর্থ্য। যেন সাক্ষাৎ ভীম। হতবুদ্ধি হবার লোক সে নয়। যাদের পিছনে সে লেগে যায় সুযোগ পেলেই তাদের ঘায়েল করতে সে দু’বার ভাবে না। পাহারাদারীতে নবীন হলেও কাজটা সে ভালই পারে। তুলো সম্রাটরা আশপাশের সব গ্রাম ভরে ফেলেছে দাস কিনে কিনে এনে। ওদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজে দাসবিদ্রোহের খবর আগুনের মত এখানেও ছড়িয়ে পড়ছে। তাতে তুলো সম্রাটদের কপালে ভাঁজ বাড়ছে। শ্বেতাঙ্গ হলেই হল; তা সে ভাল, না খামারি সে খবরে এখন কিচ্ছু আসে-যায় না। পাহারাদারী বাড়ানো হচ্ছে দিন কে দিন। না বাড়িয়ে উপায় নেই। রিজবের তাতে মওকা মিলে গেল।

পাহারাদলের সর্দারের মত এমন নৃশংস কাউকে রিজবে জীবনে দেখে নি। একটা দোকান চালায় সে। যেমন ঝগড়াটে, তেমনি মিথ্যেবাদী। তাকে দেখে ভয় পায় না এমন কেউ এ তল্লাটে নেই। তার জন্য পথ ছেড়ে দিতেই হবে অন্যদের। যেসব পালিয়ে যাওয়া দাস সে ধরে আনে, তাদের চেয়ে তাকেই বেশি দিন জেল খাটতে হয়। যাদের পাকড়াও করে সেলে আটক রাখা হয়েছে, কয়েক ঘন্টা পরে হয়ত তাদেরই পাশের সেলে তাকেও আটক রাখা হচ্ছে। এমন ঘটনা বিস্তর। লোকটা বজ্জাতের বজ্জাত; তবে রিজবে যেন ঠিক এমন এক বজ্জাতকেই তালাশ করছিল। …। বাবা এ দোকানিকে ঘৃণা করেন। ক’বছর আগে তার সাথে বাবার একটা বিবাদ হয়েছিল। রিজবে বাবাকে ভালবাসলেও লোকটার এই পরমাত্মা-ফরমাত্মা নিয়ে বগরবকর সহ্য করা রিজবের একদম পছন্দ না।

পাহারাদারী কঠিন কাজ নয় মোটেই। একটা কাউলা দেখলেই হল। তাকে থামিয়ে পাস চাও। হয়ত খুব পরিচিত কেউ, জানে সে মুক্ত হয়ে গেছে। তবু তাকে থামিয়ে তাকে হয়রানি কর। তাতে মৌজ জমে ভাল। আফ্রিকানদের আসলে মুক্তি বলে কিছু নেই। কালো হলেই হল। সে মুক্ত কিংবা কোন শ্বেতাঙ্গের কেনা গোলাম তাতে এদের কিচ্ছু আসে-যায় না। কোন দাসগাঁও থেকে কেউ পালাল কি না, তা খুঁজে দেখা তাদের কাজ। তেমন কাউকে পেলে ধরে আনা। জেলে ঢাকানোর আগ পর্যন্ত, কিংবা শ্বেতাঙ্গ মালিকের জিম্মায় দেবার আগ পর্যন্ত পাকড়াও করা নিগারটাকে বেতিয়ে বেতিয়ে আধমরা করবে।

বিদ্রোহের খবরে গোলামদের পালানোর হিড়িক পড়েছে। আর তাতে এরাও বেজায় খুশি। পালিয়ে যাওয়া গোলাম পাকড়াও করার মজাই আলাদা। বিভিন্ন তুলো খামারে দাস মহল্লা ধরে ধরে শুরু করল তল্লাসি অভিযান। তাদের জেরায় জেরায় কাউলাদের জান যাবার জোগাড়। থরহরি কম্প সবাই। মুক্তি পাওয়া কালোরা ভাল করেই জানে, তাদের জন্য কী ভয়ংকর পরিণতি অপেক্ষা করছে। দল বেঁধে শ্বেতাঙ্গরা আসবে, সঙ্গে এসব দানব দল। ভয়ে দামী জিনিসপত্তর যা আছে তা সব লুকিয়ে ফেলা ছাড়া গতি নেই। হুড়মুড় করে এসে তারা সব লুট করবে, আসবাবপত্র, কাঁচের জিনিস সব ভেঙে তছনছ করবে। জিনিসপত্র লুট করে করুক বা ভাঙুক, জানে যেন না মারে এটাই তাদের এখন একমাত্র প্রার্থনা।

অপমান অপদস্থের কোন সীমাপরিসীমা নেই। পরিবারের সবার সামনে আলোনা ছোকরাগুলো মিলে অসহ্য সব বাজে অঙ্গভঙ্গি করে। বুড়ো মাটারের খামারে ছিল সবচেয়ে নিরীহ একটা মেয়ে। মাটার সাহেবের রুচির তারিফ করতে হয়। তাণ্ডব শুরু হলে লালসাকাতর এক পাহারী তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। অনেকের মতে, স্টোন সাহেবের খামারে দেশের সেরা হুইস্কি তৈরির কর্ন চাষ হয়।

বজ্জাতির উদগ্র ক্ষুধার্তের নাম রিজবে। কনফেডারেটদের সবচেয়ে লোমহর্ষক দৃশ্যের মূল নায়ক এই রিজবে। অন্য সব ছোকরা বা যুবকরাও সমান বদমাশ। এসব নৃশংস কাজের জন্য একবারে যুৎসই। অন্য কোন দেশে এরা পাঁড় ক্রিমিনাল হিসেবেই চিহ্নিত হবে; কিন্তু এটা আমেরিকা! রাতে কাজ করতে তাদের অসীম উৎসাহ। কেননা, রাতের বেলা কোন কোন গোলাম গোপনে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে স্ত্রীর সাথে মিলিত হতে যায়। কাঠবিড়ালী শিকারীরাও তখন শিকার খোঁজে। অন্য পাহারীরা কাঁধে বন্দুক নিয়ে ঘোরে। ভয়ে কোন রাস্কেল পালানোর সাহস দেখায় না। কিন্তু রিজবের পছন্দ এই দোকানদার লোকটা। ইঁদুরের মত তাড়িয়ে এনে রিজবে তাদের ওপর চড়াও হয়। তারপর কিল-ঘুসিতেই কম্মকাবার। খামার থেকে কেউ বাইওে তাদের ধরে গেলেই বেদম পেটায়। দৌঁড় দিয়েও রেহাই নেই। তাড়া খেয়ে অন্ধকারে জঙ্গলে ঠুল খেতে খেতে প্রাণ নিয়ে পালাতে চেষ্টা করেও পার পায় না গোলামরা। রিজবে ঠিকই হিংস্র বাঘের মত ধরে ফেলে। তখন তার রক্ত গনগনে আগুনের মতো জ¦লতে থাকে।

দিনশেষে রিজবের বাবা সারা দিনের পরিশ্রমের ফসল এক জায়গায় সাজালেন: একটা গাদা বন্দুক, একটা বিদে আর একটা ওয়াগন স্প্রিং। সেখানে নিজের হাতে পাকড়াও হওয়া একটা ছেলে আর একটা মেয়েকে দেখে রিজবে অবাক। ছেলেটা গাদা বন্দুক তৈরি করেছে, মেয়েটা একটা বন্দুক মেরামত করেছে। বাবা খোঁটা দিয়ে বললেন, “দেইছিস পরমাত্মা ক’ন থায়? তুই তো ভাবিস, এদের মাতায় গোবর পুরা। দেখ, দেখ, ইরাও কত কাজের।”

রিজবের বয়স এখন আঠারো। পূর্ণ যুবক। “দু’জনই আমরা ইলি হুইটনির জন্যি খেটে মরি রে।” কথাটা একেবারে খাঁটি। কাজ এত বেশি যে, বাবা দু’জন নবিসী কামারকে দিয়ে কাজ করিয়েও কুলোতে পারছে না। খামার যেমন বড়, তুলোর উৎপাদন তেমন বেশি। এত তুলো ধুনার জন্য চাই অনেক অনেক জিন মেশিন। তুলো বাজারে নিতে ঘোড়ার খুরের নাল, ওয়াগনের সাথে ঘোড়া জোতার জন্য নানা জিনিসপত্র, লোহার রিম, আরও কত কি। যত বেশি গোলাম, তাদের জন্য তত বেশি শেকল বানানো তো আছেই। তুলোর চাষ যত বেড়েছে, বসতিও বেড়েছে। তাদের ঘর-দরজা তৈরিতে পেরেক, গজাল ছাড়াও আরও কত ঘর তৈরির লোহার জিনিস তাকে বানাতে হয়। সেগুলো বয়ে নিতে রাস্তা বানানোর নানা হাতিয়ারও বানাতে হয়। লোহা ছাড়া কিছুতেই চলে না।

বাবার যা ইচ্চে করুক গে। থাকুক ওসব পরমাত্মা নিয়ে। আমার কি? সে যাই হোক, আসলেই কিন্তু তারা দু’জনই একই জাতির ভাগ্য নির্মাণে ব্যস্ত।

পালিয়ে যাওয়া একটা গোলাম ধরে দিতে পারলে খুব কিপটে মালিকের কাছে থেকেও পাওয়া যায় কম-সে-কম দু’ ডলার। শ’ ডলার মিলতে পারে যদি গোলামটা গাট্টাগোট্টা জবরদস্ত কেউ হয়। আর রাজ্যের বাইরে থেকে ধরে এনে দিতে পারলে মেলে এর ডবল। স্থানীয় এক খামারির পলাতক গোলাম ধরতে নিউ জার্সি গিয়ে রিজবে প্রথম অভিযানেই বাজি মাত করে ফেলে। ভার্জিনিয়ার তামাকের খামার থেকে সুদূর ট্রেন্টনে পালিয়ে গিয়েছিল বেটসি। সেখানে তার এক খালাতো বোনের বাড়িতে সে লুকিয়ে ছিল। তার বরাত খারাপ। একদিন মালিকের এক বন্ধু তাকে বাজারে দেখে চিনে ফেলে। মালিক ২০ ডলার পুরস্কার, সাথে প্রকৃত খরচ দেবার ঘোষণা দেন।

এত দূরে রিজবে আগে কখনও আসে নি। যত উত্তরে যায় তত বেশি অবাক হয়। দেশটা এত্ত বড়! একেকটা শহর দেখে তার পাগল হবার জোগাড়। ওয়াশিংটন ডিসিতে এসে তার ঘোর কাটে না। এত বড় শহর, এত আলো ঝলমল! এত প্রাণোচ্ছল! যেখানটায় ক্যাপিটল নির্মিত হচ্ছে সেখানে এসে সে বমি করে দিল। ঝিনুক খেয়ে বদহজমের কারণে, না কি ক্যাপিটল নির্মাণে বিপুল আয়োজন দেখে সে বমি করে পেট একেবারে খালি করে ফেলল সেটা বলা মুশকিল। একটা কম দামের পান্থশালা খুঁজে সেখানে উঠে। কিন্তু ছারপোকার কামড়ে রাতে ঘুমোতেই পারে নি সারা রাত। পরদিনই ছোট এক ফেরি পার হয়ে সে পৌঁছে গেল দ্বীপের মধ্যে এক জাঁকালো শহরে।

ট্রেন্টন জেলখানার ডেপুটি সাহেব তাকে বেশ করিৎকর্মা বলেই তাজিমের সাথে গ্রহণ কররেন। সন্ধ্যায় বা মজা করার জন্য যখন তখন গোলাম পেটানোই তার নোকরি। রিচমন্ডের বাইরে এক ফলের বাগানে বসে বেটসি নিশ্চিন্তে বসে ছিল। এখানে সে স্বাধীন। রোগাপটকা মেয়েটার চওড়া মুখ, চোখ দুটো ধুসর। সেখানেই রিজবে তাকে ধরে ফেলে। কোন দয়ামায়া নয়। কোন আশ^াসও নয়। মেয়েমানুষের পাশে শোবার এটাই রিজবের পয়লা অভিজ্ঞতা। সুযোগটা সে নিল পুরোদমে। তারপর তাকে শেকলে বাঁধল। বেটসি তার মুখে থুথু ছুড়ে দিয়ে জানাল তার তীব্র ঘৃণা। মালিকের বাড়িতে পৌঁছে বিটসে আবারও তার মুখে থুথু মারল। শুরু হল বেটসির মুখে রিজবে বেদম চাবুক কষা। তা দেখে মনিবের ছেলেদের আনন্দের সীমা রইল না। খুশি হয়ে পুরস্কারের অতিরিক্ত তাকে একটা কোট এনাম দিল মনিব। রিজবে আনন্দে নাচতে শুরু করল। ওয়াশিংটনে অনেককে সে এমন কোট পরতে দেখেছে। এমন একটা কোট সে নিজেও পরতে পারবে তা ছিল তার স্বপ্নের বাইরে। এনাম হিসেবে পাওয়া এ কোটটা সে অনেক বছর পরেছে।

নিউইয়র্কে ব্যস্ত সময় কাটে রিজবের। পুলিশের কাছে নর্থ ক্যারোলাইনা বা ভার্জিনিয়া থেকে কোন পলাতক গোলামের খবর পেলেই রিজবে সেখানে ছুটে যায়। এভাবে হরহামেশা তাকে নিউইয়র্ক ছুটতে হয়। বুঝে ফেলে, ভাগ্য ফেরানোর এটাই সহজ পথ। নতুন উৎসাহে সে গোলাম পাকড়াও করার কাজে লেগে গেল। কাজটা তার জন্য বেশ সহজ বটে। তক্কে তক্কে থেকে মুণ্ডু চেপে ধর। তারপর হাতপা বেঁধে উত্তম-মধ্যম দিয়ে কাহিল বানাও। এবার ঠেঙাতে ঠেঙাতে নিয়ে চল মনিবের দরবারে। এনাম মিলবেই। (চলবে)

 

আমিরুল আলম খান 

জন্ম যশোর জেলার ভারতীয় সীমান্তলগ্ন শিববাস গ্রামে ১৩৫৮ বঙ্গাব্দের ১৫ই অগ্রহায়ণ।
পড়েছেন এবং পড়িয়েছেন ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য। এরপর মাধ্যমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে যুক্ত থেকেছেন। যশোর শিক্ষা বোর্ডে প্রথমে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পরে চেয়ারম্যান ছিলেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি অপেশাদার সাংবাদিকতায় যুক্ত গত পাঁচ দশক ধরে। ইংরেজি দৈনিকে নিউ নেশান-এ প্রায় এক দশক সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেন। দৈনিক ইত্তেফাক, প্রথম আলো, সমকাল, বণিক বার্তায় কলাম লেখেন।

গ্রামীণ পাঠাগার আন্দোলনে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশে গ্রামোন্নয়নের নতুন মডেল ডিহি ইউনিয়ন পাবলিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন। দেশের প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম গণপাঠাগার যশোর পাবলিক লাইব্রেরির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

শিক্ষা, ভাষা, প্রকৃতি, কৃষি, বাস্তুসংস্থানবিদ্যায় আগ্রহী। এসব নিয়েই তার বই: বাঙলার ফল, অরণ্যের পদাবলী, পারুলের সন্ধানে, কপোতাক্ষ-মধুমতীর তীর থেকে, বিপর্যস্ত ভৈরব অববাহিকা, পারুল বিতর্ক, বাংলাদেশের শিক্ষার স্বরূপ সন্ধান এবং বিদ্যাবাণিজ্যের রাজনৈতিক-অর্থনীতি।

তাঁর অনুবাদগ্রন্থ: আফ্রিকান-আমেরিকান উপন্যাস দি স্লেভ গার্ল। হ্যারিয়েট অ্যান জেকব রচিত এই আত্মজৈবনিক উপন্যাসটি বোস্টন থেকে প্রকাশিত হয় ইনসিডেন্টস ইন দ্য লাইফ অব এ স্লেভ গার্ল শিরোনামে, ১৮৬১ সালে।

Facebook Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to Top